তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ১৬৪ রানে হারিয়ে সফরকারী বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে নিউজিল্যান্ড। ৩১৮ রান তাড়ায় শুক্রবার ৪২ ওভার ৪ বলে ১৫৪ রানে থমকে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ম্যান অব দা ম্যাচ ডেভন কনওয়ে এবং ম্যান অব দা সিরিজ হয়েছেন ডেভন কনওয়ে।
খেলার শুরুতে ছোবল দেন ম্যাট হেনরি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে বাকিটা সারেন জিমি নিশাম। ২৭ রানে ৪ উইকেট নেন হেনরি। অলরাউন্ডার নিশাম ৫ উইকেট নেন ২৭ রানে। দুই অঙ্কে যেতে পেরেছেন কেবল তিন জন। লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে আসে ২১ রান করে। ৭৩ বলে চার ছক্কা ও ছয় চারে ৭৬ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ।
রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। ৭ ওভারের মধ্যে ২৬ রানে ফিরে যান টপ অর্ডার তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার ও লিটন। তিন জনকেই বিদায় করেন হেনরি। প্রথম ওভার মেডেন খেলার পর তৃতীয় ওভারে তার বলে খোঁচা মেরে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন তামিম। পরের ওভারে পুল করার চেষ্টায় ফাইন লেগে ধরা পড়েন সৌম্য।
টেন্ট্র বোল্টকে ফ্লিক করে বাউন্ডারিতে রানের খাতা খোলা লিটন ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু তিনিও পারেননি ইনিংস বড় করতে। ফিরে যান বোল্টের দুর্দান্ত এক ক্যাচে। হেনরিকে ঠিক মতো পুল করতে পারেননি লিটন। ব্যাটের কানায় লেগে থার্ড ম্যানে যাওয়া ক্যাচ অনেকটা এগিয়ে এসে ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমান বোল্ট।
ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিক। কিন্তু দুই জনের কেউই পারছিলেন না গ্যাপ বের করতে, একটু বেশিই সাবধানী ছিলেন তারা। এক পর্যায়ে রান রেট নেমে আসে তিনের নিচে। অনেকটা সময় উইকেটে থেকেও সুবিধা করতে না পারা মিঠুন ফিরে যান রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টায়। কাইল জেমিসনের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে পুল করে ধরা পড়েন ডিপ স্কয়ার লেগে। শর্ট বলে ফিরেন মুশফিকও। জিমি নিশামকে পুল করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে দেন সহজ ফিরতি ক্যাচ। মেহেদী হাসান মিরাজ টিকেন কেবল দুই বল। নিশামের বাজে এক বলে ধরা পড়েন পয়েন্টে।
আক্রমণে ফিরে তাসকিন আহমেদ থামান হেনরি। এরপরই নিজেদের সেরা জুটি পায় বাংলাদেশ। রুবেল হোসেনের সঙ্গে ম্যাচে নিজেদের একমাত্র পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়েন মাহমুদউল্লাহ। শর্ট বল খুব একটা ভোগাতে পারেনি তাকে। খেলেছেন দারুণ সব শট। দ্রুত বাড়িয়েছেন রান। সেঞ্চুরিতে চোখ রেখে এগোচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু ৪ বলের মধ্যে রুবেল ও মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেন নিশাম। সঙ্গে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো নেন পাঁচ উইকেট। গত বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩১ রানে ৫ উইকেট তার আগের সেরা।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশও। ৫৭ রানের মধ্যে ফিরিয়ে দেন মার্টিন গাপটিল, হেনরি নিকোলস ও রস টেইলরকে। কিন্তু পরের বিবর্ণ বোলিং আর বাজে ফিল্ডিংয়ে হাত থেকে ছুটে যায় লাগাম। ডেভন কনওয়ে ও ড্যারিল মিচেলের সেঞ্চুরিতে ৬ উইকেটে ৩১৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে নিউ জিল্যান্ড।
১১০ বলে ১২৬ রানের চমৎকার ইনিংস খেলেছেন কনওয়ে। ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তিনবার বেঁচে যাওয়া মিচেল ইনিংসের শেষ বলে পৌঁছান সেঞ্চুরিতে। ৯২ বলে করেন ১০০ রান। পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের সর্বোচ্চ ১৫৯ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে শেষ ১০ ওভারে ১০৭ রান তোলে স্বাগতিকরা।
দারুণ সেঞ্চুরির জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন কনওয়ে। আগের ম্যাচ ফিফটি পাওয়া এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানই জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: