পুরো ম্যাচ জুড়ে কী রোমাঞ্চই না জাগাল দুদল। ম্যাচে জয়ের পাল্লা একবার আতলেতিকো মাদ্রিদের দিকে যায় তো আরেকবার রিয়াল মাদ্রিদের দিকে। ফলাফলের জন্য এক সময় মনে হচ্ছিল টাইব্রেকারে গড়াবে। তবে শেষ দিকে দুই গোলের কল্যাণে শেষ হাসি রিয়ালই হেসেছে। স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমিফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছাল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
বুধবার নিরপেক্ষ ভেন্যু রিয়াদের কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুদল। যেখানে মারিও এরমোসোর গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় আতলেতিকো। আন্টোনিও রুডিগার সমতা ফেরানোর পর রিয়ালকে এগিয়ে নেন ফেরলঁদ মঁদি। অঁতোয়ান গ্রিজমান সমতা আনার পর রুডিগারের আত্মঘাতী গোলে ফের এগিয়ে যায় আতলেতিকো। পরে আবার দানি কারভাহাল সমতা ফেরালে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর এই পর্বের শেষ দিকে স্তেফান সাভিচের আত্মঘাতী গোলের পর ব্রাহিম দিয়াসের গোলে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় রিয়ালের।
এদিন খেলার ষষ্ঠ মিনিটেই এগিয়ে যায় আতলেতিকো। গ্রিজমানের কর্নারে সবার ওপরে লাফিয়ে আড়াআড়ি হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন এরমোসো। গোলমুখে বেশ জটলা থাকলেও সবার মাঝ দিয়ে বল যায় জালে, কিছুই করার ছিল না গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগার।
২০তম মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। জুড বেলিংহ্যামের শট আতলেতিকোর একজনের পায়ে লেগে বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। লুকা মদ্রিচের সেই কর্নার থেকেই চমৎকার হেডে সমতা ফেরান রুডিগার। দূরের পোস্টে পুরোপুরি অরক্ষিত ছিলেন এই ডিফেন্ডার।
রিয়াল প্রতিপক্ষকে প্রবল চাপে রেখেই এগিয়ে যায় ৩০তম মিনিটে। কারভাহালের নিচু ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে আলতো কিন্তু কার্যকর এক টোকায় দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে পাঠান মঁদি।
ম্যাচের ৩৭তম মিনিটে গোল পান গ্রিজমান। পায়ের দারুণ কারিকুরি আর দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে স্কোরলাইন ২-২ করেন তিনি। রদ্রিগো দে পলের কাছ থেকে ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে কয়েকজনকে এড়িয়ে কিছুটা এগিয়ে নিখুঁত শটে জাল খুঁজে নেন তিনি।
৭৮তম মিনিটে কেপার ভুলে পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। এগিয়ে গিয়ে একটি ক্রস বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন গোলরক্ষক। কিন্তু মোরাতার চ্যালেঞ্জের মুখে ঠিকমতো পারেননি। কেপার হাত ফসকে বল রুডিগারের গায়ে লেগে জড়ায় জালে!
কিন্তু ৮৫তম মিনিটে ফের সমতা টানে রেয়াল। ভিনিসিউসের শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন ওবলাক। বেলিংহ্যামের দুটি চেষ্টাও গোললাইনের সামনে প্রতিহত হয়। কিন্তু কারভাহালের বুলেট গতির শটের জবাব জানা ছিল না আতলেতিকো গোলরক্ষকের।
সৌভাগ্যের এক গোলে ১১৬তম মিনিটে এগিয়ে যায় রিয়াল। কারভাহালের ক্রসে হোসেলু ঠিক মতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি। কিন্তু তার পাশেই থাকা সাভিচের পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে। দারুণ চেষ্টার পরও ঠেকাতে পারেননি ওবলাক। গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়ে কর্নারের সময় আতলেতিকো গোলরক্ষকও চলে এসেছিলেন রেয়ালের ডি-বক্সে। তাতে কাজ হয়নি। উল্টো দারুণ গতিতে প্রতি-আক্রমণে ছুটে গিয়ে ব্যবধান আরও বাড়ান দিয়াস।
রিয়াল চার দলের নতুন আঙ্গিকের এই সুপার কাপে টানা তৃতীয় ও সব মিলিয়ে চতুর্থবার ফাইনালে খেলবে। ২০১৯-২০ মৌসুমে প্রথম আসরে ফাইনালে খেলার পর থেকে সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিচ্ছে আতলেতিকো। লড়াকু ফুটবল উপহার দেওয়া দলটি শূন্য হাতে ফিরল আরও একবার।
আগামী রোববারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের প্রতিপক্ষ জানার অপেক্ষায় রিয়াল। বৃহস্পতিবার বার্সেলোনা ও ওসাসুনার লড়াইয়ে জয়ী দলের বিপক্ষে খেলবে তারা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: