ভিন্ন ভিন্ন সমীকরণ মাথায় নিয়ে বেঙ্গালুরুতে মাঠে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড। সেমিতে পা দিতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না কিউইদের। অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিশ্চিত করতে জয় প্রয়োজন ছিল লঙ্কানদের।
নিউজিল্যান্ড তাদের কাজটা ভালোভাবেই করেছে। বড় জয়ে নেট রানরেটটাও বাড়িয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে ৫ উইকেটের হারে রানরেটে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের এমন ভরাডুবিতে আদতে লাভ হয়েছে বাংলাদেশের। নিজেদের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৪৬ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান সংগ্রহ করেছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান এসেছে কুশল পেরেরার ব্যাট থেকে। কিউইদের হয়ে ৩৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন ট্রেন্ট বোল্ট। জবাবে খেলতে নেমে ২৩ ওভার ২ বলে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান এসেছে ডেভন কনওয়ের ব্যাট থেকে।
১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন কনওয়ে-রাচিন রবীন্দ্র। ৪৫ রান করে কনওয়ে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৮৬ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর রবীন্দ্রও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪২ রান।
তিনে নেমে ভালোই শুরু করেছিলেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ১৫ বলে করেছেন ১৪ রান। তবে রানের চাকা সচল রাখেন ড্যারিল মিচেল। এই ইনফর্ম ব্যাটার করেছেন ৩১ বলে ৪৩ রান। আর শেষদিকে গ্লেন ফিলিপসের ১০ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে সহজেই জয় পেয়েছে কিউইরা।
এর আগে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ইনফর্ম পাথুম নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফিরিয়ে লঙ্কান শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন টিম সাউদি। আসর জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ২ রান। নেতৃত্ব পাওয়ার পর নিজের স্বভাবজাত ব্যাটিংটাই যেন ভুলে বসেছেন কুশল মেন্ডিস। ব্যর্থতার বৃত্ত ভাঙতে পারেননি আজও।তিনে নেমে সুপার ফ্লপ লঙ্কান অধিনায়ক। ৭ বলে ৬ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে রাচিন রবীন্দ্রের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রমা-চারিথ আসালঙ্কারাও। ব্যাটারদের এমন আসা যাওয়ার মিছিলেও এক প্রান্তে রীতিমতো ঝড় তুলেন কুশল পেরেরা। এই ওপেনার যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন একাই রানের চাকা সচল রেখেছেন। ২২ বলে করেছেন ব্যক্তিগত ফিফটি। যা চলমান আসরে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে কাউন্টার অ্যাটাকের আভাস দিলেও পেরেরা থেমেছেন ফিফটির পরপরই। শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ৫১ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে।
৭০ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর উইকেটে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সর্তকতার সঙ্গে শুরু করেছিলেন। দেখে-শুনে খেলে ধানাঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। তবে তার প্রতিরোধ কিউই বোলারদের সামনে বেশিক্ষণ টিকেনি। বালের বাধের মতো ভেঙে গেছে! ২৭ বলে ১৬ রান করে এই ব্যাটার ফিরলে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা।
সেই বিপদ আরো বাড়িয়েছেন ধানাঞ্জয়া। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে তার ওপর গুরু দায়িত্ব ছিল। কিন্তু সেই চাপ নিতে পারেননি। ২৪ বলে ১৯ রান করে ফিরেছেন তিনি। মিচেল স্যান্টনারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্লিপে ড্যারিল মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
১২৮ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হয়েছিলেন দুশমান্থা চামিরা। এরপর দিলশান মাদুশঙ্কাকে নিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েন মাহিশ থিকশানা। শেষ উইকেটে তাদের দারুণ ব্যাটিং লঙ্কান সমর্থকদের টিকিটের টাকা কিছুটা হলেও উসুল করেছে! ১৯ রান করে মাদুশঙ্কা আউট হলে ভাঙে ৪৩ রানে জুটি। থিকশানা অপরাজিত থেকেছেন ৩৮ রান করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: