সাফজয়ী স্বপ্না ও সোহাগীকে বরণ করে নিলেন রাণীশংকৈলবাসী

আনোয়ার হোসেন আকাশ, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) | ১ অক্টোবর ২০২২, ০৪:৩৯

সংগৃহীত

গত বৃহস্পতিবার সকালে বিমানে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আসার পর সেখান থেকে পথে পথে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন সংবর্ধনা পাওয়া নারী ফুটবলার ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈলের স্বপ্না রানী ও সোহাগী কিসকু।

সাফ জয়ের ১০ দিন পর ছুটি পেয়ে (বৃহস্পতিবার) প্রথম দিনের রাতে নিজ উপজেলায় সংবর্ধনায় সিক্ত হন তারা।

তাদের বাড়িতে ফেরা রাঙ্গাতে প্রস্তুতি নেয় উপজেলা প্রশাসন। পীরগঞ্জ - রাণীশংকৈল উপজেলার প্রধান ফটকে উষ্ণ সংবর্ধনায় বরণ করে নেওয়া হয় সোহাগী কিসকু ও স্বপ্না রাণীকে।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঠাকুরগাঁও ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার প্রধান ফটকে সামনে ছাদখোলা জিপ এসে থামতেই শুরু হয় জয়ধ্বনি। মুহুর্মুহু স্লোগান আর ঢোলের বাদন। উৎসবমুখর পরিবেশে এভাবে বরণ করে নেওয়া হয় সাফ শিরোপা জয়ী দুই কৃতি নারী ফুটবলারকে। পায়ের জাদুতে ফাইনালে নেপালকে পরাজিত করে তারা দেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা করেছেন। 

সাফ জয়ী দুই নারী ফুটবলার তাদের বাড়ি ফেরার কথা শুনে রাণীশংকৈল উপজেলা প্রশাসন বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে এগারোটার পরে সাবাস বাংলাদেশ সম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম বাজিয়ে গাড়ী বহরে দুই কৃতি খেলোয়ারকে বরণ করে তাদের বাড়িতে পৌছে দেন।

সে সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক মাসুদুর রহমান বাবু, রাণীশংকৈল রাঙ্গাটুঙ্গি ইউনাইটেড প্রমিলা ফুটবল একাডেমির পরিচালক তাজুল ইসলাম, জেলা ফুটবল এসোশিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার গুপ্ত, ক্রীড়া সংস্থার সদস্য লেবিন, কোচ খাইরুল বাশার ও সুর্গা মুরমু।

নিজ মেয়েকে বাড়িতে পেয়ে খুশিতে ভাসছে সোহাগীও স্বপ্নার পরিবার। এসময় স্বপ্নার বাবা নিরেন চন্দ্র বলেন আমার স্বপ্না আজ আমার নয় দেশের সম্পদ । আগামিতে সে ভালো কিছু উপহার দিবে বলে আমার বিশ্বাস।

তিনি আরো বলেন এ অর্জনের পিছনে রয়েছে সাবেক অধ্যক্ষ তাজুল ইসলাম কোচ জয়নুল ও সুর্গার অবদান। মেয়ে আসবে তাই রাতে বাতি জ্বালিয়ে রাস্তায় বসে ছিল সোহাগীর বাবা গুলজার কিসকু।
আইনশৃংখলা বাহিনীর গাড়ী দেখে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করছিল সে সময় মেয়ে গাড়ীতে নেমেই ঝাপটে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন পরিবারের সকলেই।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বপ্না রানী বলেন, ‘আমরা অভিভূত। এত মানুষ আমাদের জন্য বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। এটা দেখে আমাদের স্বপ্ন অনেক বড় হয়ে গেল। দেশের জন্য আরও অনেক কিছু করতে হবে।’

সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে স্বপ্না রানী আরো বলেন, সাফ জয়ে যেভাবে আমরা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পেরেছি। এই ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রেখে আগামীতে দেশের জন্য আরও বড় অর্জনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।

সোহাগী কিসকু বলেন, ‘দেশ আমার কাছে মায়ের সমান। মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে আরও ভালো খেলতে চাই। আপনাদের পাশে চাই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন দুই ফুটবলার এ অঞ্চলের গর্ব। এ জন্য তাঁদের বরণ করে নেওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী রবিবার (০২অক্টোবর) তাদের দুজনকে ডিগ্রি কলেজ মাঠে গনসংবর্ধনার দেওয়া হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: