সাইফুল্লাহ সানির মোটরবাইকে দুর্গম লাদাখ ভ্রমণ

মমিনুল হক রাকিব | ২৪ জুলাই ২০২২, ০৯:৩৫

সংগৃহীত

সাইফুল্লাহ সানি, বাংলাদেশের বেশ জনপ্রিয় একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ও মটোভ্লগার। বাইক চালিয়ে ঘুরে বেড়ান দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। মোটরবাইক হাঁকিয়ে ঘুরেছেন সমগ্র বাংলাদেশ। দেশের গন্ডি পেরিয়ে এবার বাইকেই ঘুরে এলেন ভারতের দুর্গম এলাকা লাদাখ। 

সাইফুল্লাহ সানির ব্যক্তিগত ইউটিউব চ্যানেল “Sany Giri” এর সাথে যুক্ত রয়েছেন প্রায় ৯৫ হাজার মানুষ, খুব শীঘ্রই স্পর্শ করবেন ১ লাখের মাইলফলক। ভারত ভ্রমণের ভিডিও ভক্তদের সাথে শেয়ার করেছেন তাঁর ইউটিউব চ্যানেল এর মাধ্যমে। 

লাদাখ ভ্রমণের গল্পটা ২৭ এপ্রিল ২০২২ থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ মে দেশে ফিরে আসার মধ্য দিয়ে। এবারই প্রথমবারের মত দেশের বাইরে ভ্রমণ করেন সাইফুল্লাহ সানি। এই ভ্রমণে তাঁর সঙ্গী হিসেবে ছিলো তাঁর বন্ধু তৌকির।

ঢাকা থেকে বাস এবং পায়ে হেটে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ এর মাধ্যমে শুরু হয় সানি’র লাদাখ ভ্রমণ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে ট্রেনে দিল্লী এবং সেখান থেকে ভাড়ায় মোটরবাইক নিয়ে লাদাখ এর উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেন তিনি। 

প্রথমবারের মত দেশের বাইরে ভ্রমণ, তাও আবার মোটরবাইকে লাদাখের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রার অভিজ্ঞতা শুনতে চাইলে সানি বলেন, “এই ভ্রমণটা ছিলো আমার একটি স্বপ্ন, তবে এবার আমি প্রথমবার পরিবার ছাড়া ঈদ করেছি। এ অভিজ্ঞতাটা মোটেও সুখকর ছিলো না। নিজেদের পরিবারকে খুব মিস করছিলাম আমরা এবং ঈদের দিন আমরা অবস্থান করছিলাম ভারতের পাঠানকোট অঞ্চলে। আমাদের আশেপাশে কোনো মসজিদও ছিলো না যে আমরা ঈদের নামাজ আদায় করবো”।

বাংলাদেশী হিসেবে তাঁর মোটরবাইক নিয়ে ঘুরে বেড়াতে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিল করতে হয়নি যাত্রাপথে, তবে লাদাখ এর বেশ কিছু জায়গা, যেমনঃ প্যাংগং লেক, নুব্রা ভ্যালি প্রবেশে ছিলো বেশ কড়াকড়ি বিধিনিষেধ। 

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এতো উঁচুতে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কি ফিরে আসার মানসিকতা তৈরী হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “হ্যা। সত্যি বলতে বেশ কয়েকবার মনে হচ্ছিলো আর হয়তো সম্ভব না কিন্তু প্রতিনিয়ত নিজেকে নিজেই সাহস জুগিয়েছি আর প্রকৃতি এতো সুন্দর সেটাকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়েছিলাম তখন। বৈরী আবহাওয়া মোকাবিলা করা আমাদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো। কাশ্মির এর গুলমার্গ যাওয়ার পথে আমরা মারাত্মক ঠান্ডার সাথে শিলাবৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছিলাম, তখন মনে হয়েছিল আর রাইড করা সম্ভব না কিন্তু তারপরো মনোবল ধরে রেখে এগিয়ে গিয়েছি। আমরা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭ হাজার ফিট এরও বেশি উপরে মাইনাস ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও বাইক চালিয়েছি। এই অভিজ্ঞতাগুলো বেশ রোমাঞ্চকর ছিলো আমাদের জন্য”।

মোটরবাইকে যারা দেশের বাইরেও ঘুরে বেড়াতে চান তাদের উদ্দ্যেশ্যে সানি বলেন, “মোটরবাইক নিয়ে দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়ার আগে দেশটা ঘুরে দেখা উচিত। দেশের ভিতরে মোটরবাইকে ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তারপর দেশের বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়া উচিত। তাছাড়াও যে দেশে যাবেন সে দেশের রাস্তা-ঘাট, আবহাওয়া ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কে ভালোভাবে তথ্য নিয়ে তারপর যেতে হবে তবে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের মহাসড়কগুলো বেশ প্রশস্ত এবং নিরাপদ তাই পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং আগ্রহ থাকলে মোটরবাইক চালিয়ে ভ্রমণ করা সম্ভব”।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: