নাটক প্রত্যাহার, ক্ষমা চাইলেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা

সময় ট্রিবিউন | ২৬ জুলাই ২০২১, ০৭:০৩

ছবিঃ সংগৃহীত

ছোট পর্দার আলোচিত জুটি আফরান নিশো ও মেহজাবীন চৌধুরী। একাধিক নাটকে ভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন তাঁরা। এবার ‘ঘটনা সত্য’ শিরোনামের একটি নাটকে অভিনয় করে সমালোচনার মুখে পড়েন এই জুটি। এটি নির্মাণ করেছেন রুবেল হাসান। নাটকে ভুল বার্তা যাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতিতে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

তাঁরা বলেছেন, ‘নাটকের নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পী এবং কলাকুশলীদের পক্ষ থেকে আমরা গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। অনেকেই জানিয়েছেন, এ নাটকের মাধ্যমে ভুল বার্তা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগটির সঙ্গে আমরা সহমত পোষণ করছি। বিষয়টি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। যারা আমাদের নাটক ‘ঘটনা সত্য’র এ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছেন, সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে জানাই, প্রথম বার্তা পাওয়ার পরপরই আমরা উপলব্ধি করি, অসাবধানতাবশত আমাদের নাটকে একটি ভুল বার্তা চলে গেছে। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিই এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনের কাজ চলছে।’ তিনি যোগ করেন, ‘প্রত্যেক বাবা-মা ও সন্তানের প্রতি আমাদের ভালোবাসা জানাই। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন প্রযোজনা তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, যা সঠিক বার্তা সমাজে ছড়িয়ে দেয় এবং দর্শকদের সঠিক পথে পরিচালিত করে।’

একজন অটিস্টিক সন্তানের মা এবং পিএফডিএ-ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের চেয়ারম্যান সাজিদা রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষদের পরিবার এবং পিতা-মাতাকে মানসিক আঘাত করে এবং প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে যে ধরনের নেতিবাচক বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক, মানহানিকর। অনেক শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও বদ্ধমূল ধারণা আছে, যেকোনো পাপের ফলে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর জন্ম হয়। নাটকে যখন এমন বার্তা প্রচার করা হয়, তখন তা আরও প্রতিষ্ঠা পায়। একটা নাটক লেখা থেকে শুরু করে প্রচার পর্যন্ত অনেকগুলো ধাপ পার করতে হয়েছে, এমন সংবেদনশীল বিষয়টি কারও নজরে একবারও এল না!’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে জনপ্রিয় উপস্থাপক ডা. আব্দুন নুর তুষার বলেছেন,‘ অশিক্ষা আর বর্বরতা; উজবুকি আর আহাম্মকির চূড়ান্ত নিদর্শন হলো সি এম ভি এর ব‍্যানারে এক নাটক যেখানে সন্তানের অটিজম স্পেকট্রাম ও অন‍্যান‍্য behavioural disorder ও জেনেটিক কন্ডিশনকে মা বাবার পাপের/ভুলের শাস্তি হিসেবে ইংগিত করে দেখানো হয়েছে। এই নাটকের প্রচার বন্ধ করা উচিত এবং নাটকের কাহিনীকার ও পরিচালক প্রযোজক এর উচিত প্রকাশ‍্যে ক্ষমা চাওয়া। তথ‍্য মন্ত্রণালয়ের অবিলম্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা দরকার যেখানে এধরনের বলদদের তৈরী করা কনটেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ ও বিচার করা হবে। শত শত বাবা মায়ের মনে এরা কুৎসিত আঘাত করেছে। গর্দভগুলিকে আমার প্রশ্ন, তাদের নিজেদের বাবামায়ের কোন পাপে তাদের মতো এরকম অকাল কুষ্মান্ড জন্ম নিয়েছিল? দেশে একটি সম্প্রচার পর্যবেক্ষণ কমিশন করা দরকার।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: