একুশে পদকপ্রাপ্ত কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী সুবীর নন্দীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। সংগীত অঙ্গনে চার দশকের ক্যারিয়ারে সুবীর নন্দী আড়াই হাজারেরও বেশি গান গেয়েছেন। স্বীকৃতি হিসেবে পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
২০১৯ সালের এই দিনে (৭ মে) সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ৮ মে ঢাকায় আসে তার মরদেহ। এরপর ঢাকেশ্বরী মন্দির, শহীদ মিনার শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্ত সেসব চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে— মহানায়ক (১৯৮৪), শুভদা (১৯৮৬), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), মেঘের পরে মেঘ (২০০৪) ও মহুয়া সুন্দরী (২০১৫)।
১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত সংগীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সুবীর নন্দী। বাবার চাকরি-সূত্রে তার শৈশব কেটেছে চা-বাগানে। সুবীর নন্দী গানের পাশাপাশি ব্যাংকে চাকরি করেছেন।
মা পুতুল রানীর কাছে সুবীর নন্দী সংগীতের হাতেখড়ি নেওয়ার পর ওস্তাদ বাবর আলী খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন। সিলেট বেতারে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে।
১৯৭৬ সালে আব্দুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্লেব্যাকে আসেন সুবীর। ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি অনেক জনপ্রিয় হয়েছিল।
ধীরে ধীরে সুবীর নন্দীর দরদী কণ্ঠের রোমান্টিক আধুনিক গান ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এরপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি।
বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে গান গেয়েছেন সুবীর নন্দী। ১৯৮১ সালে তার প্রথম একক অ্যালবাম ‘সুবীর নন্দীর গান’ প্রকাশিত হয়। চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম গান করেন ১৯৭৬ সালে। সেটি ছিল ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্র।
সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘কতো যে তোমাকে বেসেছি ভালো’, ‘পাহাড়ের কান্না দেখে’, ‘আমি বৃষ্টির কাছ থেকে কাঁদতে শিখেছি’, ‘একটা ছিল সোনার কইন্যা’, ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’ শ্রোতাদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: