বেশীরভাগ ক্ষেত্রে নারীরাই আক্রান্ত;

সাইবার বুলিং; নতুন এক বিড়ম্বনার নাম তবে রয়েছে প্রতিকার

মাহিয়া লোবা | ১৫ মার্চ ২০২১, ১৯:৫০

ছবিঃ বিবিসি

ফেইসবুক, ম্যাসেন্জার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বর্তমানে নানা ধরণের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নেটিজেনরা। তারা বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধীদের শিকারে পরিণত হচ্ছেন। এর মধ্যে অন্যতম সাইবার বুলিং।বুলিং বলতে আমরা বুঝি একজন ব্যাক্তিকে সুনির্দিষ্টভাবে সবার সামনে দোষারোপ বা খারাপ ভাষায় আক্রমণ করা। এছাড়া কারো ছবি বা ভিডিও বিকৃত করে অনলাইনে তুলে ধরাও বুলিং এর মধ্যে পরে।

মূলত ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে কারো ব্যাক্তিগত দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে হেয় প্রতিপন্ন করা, ভয় দেখানো, মানসিক নির্যাতন বা অন্যায় কোন কিছুতে প্রলুব্ধ করা ইত্যাদি সাইবার বুলিজম এর মধ্যে পরে। এটি এক ধরণের সাইবার অপরাধ।ইন্টারনেটের এই সময়ে এসে সাইবার বুলিং জটিল এক মনস্তাত্ত্বিক উপদ্রব। যার শিকার হচ্ছেন কম বেশি সব বয়সের মানুষ। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীরা এবং নারীরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
তথ্য বলছে দেশের ৪৯ শতাংশ অপ্রাপ্ত বয়স্ক কিশোর-কিশোরী সাইবার বুলিং এর নিয়মিত শিকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী দেশের তিন চতুর্থাংশ নারীই সাইবার বুলিং এর শিকার।
তবে এ বিষয়টি অপ্রকাশিতই থেকে যায়। মাত্র ২৬ শতাংশ অভিযোগ দায়ের করেন।বাকিরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়ে চুপ করে থাকেন।

সাইবার বুলিং এর শিকার ব্যাক্তি প্রচন্ড হতাশা, পড়াশোনায় অমনোযোগিতা, অনিদ্রা ইত্যাদি নানা সমস্যায় ভুগতে পারেন। এমনকি আত্মহননের ঘটনাও ঘটতে পারে।
সাইবার বুলিং এ চুপ থাকার নীতিই বড় ক্ষতির অন্যতম কারণ। পরিবার এর কথা ভেবে কিংবা সম্মান হারানোর ভয়ে অনেকেই চুপচাপ সব সয়ে যান কিংবা চেপে যান। অপরাধীরা এর ফলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে।

সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ জেনিফার আলম বলছেন, "সাইবার ক্রাইম এর শিকার হয়েও মানুষ আইনি পদক্ষেপ নেয় না। আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পূর্ণ সক্ষমতা আছে যেকোনো ধরনের সাইবার বুলিং বা সাইবার হ্যারেজমেন্ট ট্রেক করার এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার।কিন্তু যিনি ভিকটিম তাঁকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনাকে প্রতিকার চাইতে হবে। আপনি থানায় জিডি করুন চাইলে কোর্টেও মামলা করতে পারেন।"

হয়রানির শিকার যে কেউ এখন ৯৯৯ এ কল অথবা পুলিশ এর ফেইসবুক পেজে নক করলেও সহায়তা পাবেন। এছাড়া মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর হটলাইন ১০৯২১ নম্বরে গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ধরণের সমস্যার সমাধান পেতে পারেন। সরাসরি বিটিআরসির ফোনে, ই-মেইলেও অভিযোগ করা যায়। বিড়ম্বনার শিকার যে অনলাইন জগতে সেই জগতেই এর সুরাহা সন্ধানের ও পথের দিশা পাওয়া যায়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: