ক্যারিয়ার প্ল্যানিং এ যে ভুলগুলো আমরা করি

নাজিরুল ইসলাম নাদিম | ১ মে ২০২৩, ০৪:০৩

ছবিঃ সংগৃহীত

অনার্স শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা জানিনা আমরা কি করব! চারপাশে সবকিছু দেখি আর ভাবি আমারে দিয়া বুঝি কিছুই সম্ভব না। কিন্তু ক্যারিয়ারে আমি কি করতে চাই, সেটা পড়াশোনা শেষ হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। সেভাবেই খোজ খবর নিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করাটা উচিত। দেশের বাইরে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়ার ইচ্ছা থাকলে সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া উচিত, কর্পোরেট জবে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে নিজের সিভিকে সেভাবেই প্রস্তুত করা উচিত।

আমাদের প্ল্যান এ ও প্ল্যান বি থাকে না।আমরা সবাই বিসিএস ক্যাডার হতে চাই,কিন্তু ওটা না হলে পরে আমি কি করব তা জানিনা।আমরা ব্যবসা করতে চাই,কিন্তু ব্যবসাটা না দাড়ালে কি করব সেই প্ল্যান আমাদের থাকে না। যে কোন প্ল্যানিং এর অবশ্যই ২-৩টা ব্যাকাপ প্ল্যান থাকা উচিত। আমি সরকারী চাকরী চাচ্ছি,কিন্তু সেটাতে সফল না হলে বেসরকারী চাকরী বা অন্য কোন ক্যারিয়ার এ কিভাবে নিজেকে সফল করা যায় সেটার প্রস্তুতিও থাকা উচিত।

আমরা সময় দিতে চাইনা। আমরা কোন ব্যবসায়িক উদ্যোগ নিলে অল্পদিনের মধ্যে কোটিপতি হতে চাই। আমরা চাই অনার্স পাশ করেই বিসিএস ক্যাডার হয়ে যেতে। কিন্তু এই তীব্র গতিতে ছুটে চলা সমাজের সবাই স্মার্ট, সবাই শ্রম দিচ্ছে, সবাই এগিয়ে যেতে চাচ্ছে।তাদের সাথে যুদ্ধ করে জিততে হলে তাদের চেয়েও বেশী পরিশ্রম করা লাগবে, বেশী সময় দেয়া লাগবে।সবার দক্ষতা ও মেধা সমান না।একজন এক মাসেই যেটা পারে আমার সেটা এক বছর লাগতেই পারে, এই সত্যটা আমরা ভুলে যাই।

প্রচন্ড পরিমাণ দ্বিধাদ্বন্দে ভোগা মানুষরা ক্যারিয়ারে সফল হয় না।এরা পড়াশোনা শেষ করেই নীলক্ষেত থেকে ৮-১০হাজার টাকার বিসিএস এর বই কিনে ফেলে।এরপর এত পড়াশোনা দেখে হতাশ হয়ে ভাবে কর্পোরেট জব করবে,কিন্তু ওখানেও যুদ্ধ।কোন বন্ধুকে উদ্যোক্তা হতে দেখে ভাবে উদ্যোক্তা হব।শেষে কিছুই হওয়া হয়ে উঠে না।নিজের প্ল্যানে অটুট থাকতে হবে।আমার কি হওয়া উচিত এটা আমি জানি এবং এটার জন্যই আমি সর্বোচ্চ শ্রম দিতে চাই।

একাকীত্ব আপনাকে নি:শেষ করে দিতে পারে। আপনি যেদিন থেকে বেকার হবেন সেদিন থেকেই আপনার বন্ধুত্বের বেশী প্রয়োজন। সেই বন্ধু যারা আপনার মতই বেকার, যারা চাকরী খুজছে বা আপনার মতই বাইরে পড়াশোনা করতে যেতে চাচ্ছে।তাদের সাথে যোগাযোগ থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান সহজেই হয়ে যাই,নিজের মনোবল বাড়ে, একত্রে যুদ্ধ করার সাহসটা পাওয়া যায়।এই সময়ে আপনি একাকী হয়ে গেলে,একা চিন্তা করলে ও একা যুদ্ধ করতে চাইলে অনেক বেশী ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন। ও দ্রুতই হতাশা এসে ঘিরে ধরবে

নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে দেয় তাদের পরিবার। পাস করেই ছেলে চাকরী করবে,পরিবারের দায়িত্ব নিবে, ছোট বোনের বিয়ে দিবে,বাবার সুস্থতা, মা এর শাড়ি সবকিছুর চাপে পরে ছেলেটা জানেনা কি করবে।ভাল ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও পি.এইচ.ডি করতে যেতে চায় না পরিবারের কারণে।সরকারী চাকরীর প্রস্তুতির সময় দিতে পারে না কারণ পরিবারের টাকা লাগবে।এই সময়টায় যদি পরিবার থেকে সে সাপোর্ট পায়, অনেক কিছুই অর্জন করতে পারে।

এরপরেও অনেক কিছু সৃষ্টিকর্তার উপরেও নির্ভর করে।সৃষ্টিকর্তার সুদৃষ্টি না থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব না।তবে নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করাটা উচিত।পরবর্তীতে যাতে আফসোস না থাকে যে , ইশ, যদি আরেকটু চেষ্টা যদি করতাম আমিও হয়ত পারতাম।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: