বিয়ের প্রথম বছরটি যে কারণে সবচেয়ে কঠিন

সময় ট্রিবিউন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২১:৫৪

সংগৃহীত

বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা ও পরে হানিমুনের পর্বের মাধ্যমে শেষ হয় বিবাহ উৎসব। বিয়ের পর দম্পতিরা একে অন্যের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানোর চেষ্টা করেন। এতে দুজনের মধ্যে বোঝাপোড়া ও ভালোবাসা বাড়ে।

স্বামী-স্ত্রী উভয়ের কাছেই বিয়ের প্রথম বছর অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে গবেষকরা জানাচ্ছেন, বিয়ের প্রথম বছরই নাকি স্বামী-স্ত্রী উভয়ই কঠিন সময় পার করেন। তবে এর কারণ কী? চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক-

আরও দায়িত্ব পালন করা

বিয়ের পর সংসার জীবনে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর নানা দায়িত্ব এসে পড়ে। বিয়ে শুধু উদযাপন, নতুন জামাকাপড়, গহনা ও উপভোগের বিষয় নয়। বিবাহের সঙ্গে সঙ্গে দম্পতির ঘাড়ে বাড়তি দায়িত্বও এসে পড়ে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে বিয়ের পর বাইরের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নতুন বউ ও তার পরিবারের জন্য ভাবতে হয়।

আবার অন্যদিকে নারীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির লোকদের দেখাশোনা ও তাদের খুশি রাখার দায়িত্ব এসে পড়ে ঘাড়ে।

নতুন পরিবেশে অসুবিধা

বিয়ের পর বেশিরভাগ নারীই স্বামীর পরিবারে চলে যান। সেখানে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া অনেকের ক্ষেত্রে কষ্টকর হতে পারে।

বাবা-মা ও নিজ পরিবার থেকে দূরে গিয়ে স্বামীর পরিবারকে আপন করে নিতে হয়ে নারীদের। সেক্ষেত্রে নতুন পরিবেশ ও মানুষের মধ্যে মানিয়ে চলা অনেকেরই অসুবিধার কারণ হয়।

সংস্কৃতি ও রীতিনীতির পরিবর্তন

সবারই নিজ নিজ সংস্কৃতি আছে, তবে বিয়ের পর নতুন পরিবেশে যাওয়ার পর ভিন্ন সংস্কৃতি ও অভ্যাস শিখতে হয় পরিবারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে।

আপনার শ্বশুরবাড়ির মানুষেরা আশা করতে পারে যে আপনি মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। তবে তা আদৌ সম্ভব নয় কিছুদিনের মধ্যেই।

নানাজনের প্রত্যাশা

আপনাকে নিয়ে পরিবার ও প্রিয়জনের নানা প্রত্যাশা থাকতে পারে। তা পূরণের চেষ্টা করা সবার জন্য সম্ভব হয়ে নাও উঠতে পারে।

নারীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিয়ের পরপরই শ্বশুরবাড়ির অনেকেই দ্রুত সন্তান নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।

আবার রান্না, ঘরের কাজ, পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়াসহ বিভিন্ন কিছুর আশা করেন শ্বশুরবাড়ির মানুষেরা। সবকিছু মিলিয়ে নতুন বউ বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নানা চাপে জীবন কাটান।

সঙ্গীকে কম কাছে পাওয়া

বিয়ের পর পরিবার-পরিজনদের সামলাতে গিয়ে দেখা যায়, দম্পতি একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতেই পারছেন না। যা বিয়ের প্রথম বছরটি আপনার প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কঠিন করে তুলতে পারে।

বিয়ের আগে হয়তো ভেবেছিলেন যে আপনি একে অপরের সঙ্গে কাটানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাবেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিয়ের পর বিভিন্ন কারণে সঙ্গীকে সময় দেওয়া কঠিন হতে পারে কারও কারও কাছে।

সঙ্গীর নেতিবাচক দিক সামনে আসা

বিয়ের পর একসঙ্গে এক ছাদের তলায় বসবাস করার সময় দম্পতিরা একে অন্যের দুর্বলতাও টের পান। সঙ্গীর নেতিবাচক দিকগুলো কখনো কখনো আপনাকে হতাশ করতে পারে।

এমন হতে পারে যে, আপনি সঙ্গীর কাছ থেকে যা আশা করেছিলেন তিনি সম্পূর্ণই তার ব্যাতিক্রম করছেন। যা আপনার জন্য কষ্টদায়ক হতে পারে।

মতের অমিল

ভালোবাসার সম্পর্কে থাকাকালীন অনেকেই হয়তো ভাবেন, সঙ্গীর সঙ্গে তার মতের মিল আছে। তবে বিয়ের পর দেখা যায়, পরিবেশ-পরিস্থিতির বিবেচনায় দুজনের মত ভিন্ন হতেই পারে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বও হতে পারে।

তবে নিজেদেরকে আরও ভালো করে বুঝতে ও জানতে বিয়ের পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে খোলাখুশি কথা বলা উচিত দম্পতিদের। মতের অমিল হতেই পারে, তবে কারও উপর জোর করে নিজের মত চাপাতে যাবেন না।

বিয়ের পর সবার জীবনই নতুন এক মোড় নেয়। প্রতিটি সম্পর্কেই উত্থান-পতন থাকে। তবে বিয়ের প্রথম বছরে যে কেউই মানিয়ে নিতে পারেন না তা কিন্তু নয়।

দাম্পত্য জীবনের নানা সমস্যায় ভয় পাওয়ার পরিবর্তে, ধৈর্যের সঙ্গে তাদের মোকাবেলা করুন। দাম্পত্যে একে অন্যকে বোঝাপোড়ার মাধ্যমে বিবাহকে সফল ও সুখী করতে পারেন।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: