নড়াচড়া কম করলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে। আর টিভির কারণে বসে থাকা হয় বেশি। গবেষণা বলছে, প্রতি ১০ জন ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’য়ে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে একজনের এই রোগটাই হত না যদি সেই ব্যক্তি দিনে এক ঘণ্টার কম টিভি দেখতেন।
চর্বি যখন হৃদযন্ত্রের রক্তনালীগুলোতে জমে গিয়ে তা সরু করে দেয় তখনই ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’ দেখা দেয়। আর গবেষণা বলছে টিভির সামনে বসে কাটানো সময়ের পরিমাণ যত কমবে ততই কমবে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা।
এই গবেষণার লেখক, ইউনিভার্সিটি অফ হংকং’য়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. ইয়ংয়োন কিম বলেন, “বসে টিভি দেখার অভ্যাস কমানো হলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর অন্যমত প্রধান অভ্যাসগত পরিবর্তন। বংশগত ও পারিপার্শ্বিক আরও সব কারণ ছাপিয়ে যায় এর গুরুত্ব।”
তিনি বলেন, “টিভি দেখা আর হৃদরোগের মধ্যকার এই সম্পর্কের কারণ আমরা খুঁজিনি। তবে এই বিষয়ে হওয়া আগের গবেষণাগুলো দেখিয়েছে এই অভ্যাসের সঙ্গে শরীরে কোলেস্টেরল আর গ্লুকোজ’য়ের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক প্রবল। আর সেখান থেকেই বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি,” দ্য গার্ডিয়ান’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবেই ব্যাখ্যা করেন কিম।
কিম ও তার দল এই গবেষণায় পর্যবেক্ষণ করেছেন ৩,৭৩,০২৬ জন ব্রিটিশ নাগরিককে যাদের বয়স ৪০ থেকে ৬৯ বছর।
‘বিএমসি মেডিসিন’ শীর্ষক সাময়িকীতে তারা জানান কীভাবে এই গবেষণায় ব্যবহার হয়েছে অংশগ্রহণকারীদের থেকে সংগ্রহ করা তথ্য। ‘ইউকে বায়োব্যাংক স্টাডি’র একটি অংশ হল এই গবেষণা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, “এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সময় কারও ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’ বা স্ট্রোকের ইতিহাস ছিল না। তবে পরবর্তী সময়ে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ৯,১৮৫ জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
২০২১ সাল পর্যন্ত দেশটির ‘ডেথ রেজিস্ট্রি’ আর হাসপাতালে ভর্তির নথি থেকে এই তথ্য পান গবেষকরা।
সবকিছু বিবেচনার পরও দেখা যায় যত বেশি একজন মানুষ বসে বসে টিভি দেখবে, তার হৃদরোগের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা ততই বাড়বে।
যেমন- যারা দিনে চার ঘণ্টা টিভি দেখেন তাদের তুলনায় যারা দিনে এক ঘণ্টা বা তারও কম সময় টিভি দেখেন তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ১৬ শতাংশ কম। দুই বা তিন ঘণ্টা দেখলে রোগের ঝুঁকি কমে ৬ শতাংশ।
যদিও এই গবেষণা প্রমান করে না যে টিভি দেখার অভ্যাস ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’য়ের ঝুঁকি বাড়ায়, তবে গবেষকরা দাবি করছেন ১১ শতাংশ ‘করোনারি হার্ট ডিজিজ’য়ের রোগী কমে যাওয়া সম্ভব যদি মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে বসে টিভি দেখা আর এটা সেটা খাওয়ার অভ্যাস কমায় বা ত্যাগ করে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: