ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ায় যেসব খাবার

সময় ট্রিবিউন | ১ মে ২০২১, ২০:০৫

ছবিঃ ইন্টারনেট

করোনাকালে খাদ্যতালিকায় খাদ্য উপাদানের সঠিক উপস্থিতি ফুসফুস ভালো রাখতে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক ও সচল রাখতে সাহায্য করে থাকে। কোনো একটি নির্দিষ্ট খাবার প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে না, সেজন্য চাই স্বাস্থ্যকর খাবার সংবলিত তালিকা।

দানাশস্য: লাল চাল, লাল আটা বা এদের তৈরি সামগ্রী,ওটস্, বার্লি ইত্যাদি ফুসফুস ভালো রাখতে কার্যকর। এগুলো থেকে যে খাদ্য আঁশ পাওয়া যায় তা যেমন ফুসফুসের জন্য উপকারী তেমনি এতে রয়েছ এন্টি অক্সিডেন্ট, এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য, ভিটামিন-ই, সেলেনিয়াম ও অত্যাবশ্যকীয় ফ্যাটি এসিড, যা ফুসফুসের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে ও ফুসফুসকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

ভিটামিন-ডি: ভিটামিন-ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে থাকে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিন-ডি এর ঘাটতি দেখা দিলে ফুসফুসের রোগ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। সূর্যের আলো এর অন্যতম উত্স। পাশাপাশি দুধ, ডিম, দই, মাছ, মাংস ইত্যাদি থেকেও পাওয়া যায় ভিটামিন-ডি।

প্রোটিন: দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, বাদাম, ডাল, নানা বীজ জাতীয় খাবার ইত্যাদি প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে থাকে। প্রতিদিন পরিমাণ মতো প্রোটিন খাবার তালিকায় রাখলে তা শ্বাসযন্ত্রের পেশি বা ফুসফুসের পেশির কার্যকারিতা সঠিক রাখে।

সবুজ শাকসবজি: ফুসফুসের সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, প্রদাহ কমাতে ও নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সবুজ শাকসবজির ভূমিকা অপরিসীম। এতে বিদ্যমান ক্লোরোফিল ফুসফুসের রক্তপ্রবাহ সঠিকভাবে সচল রাখতে সাহায্য করে। এতে এন্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় যেগুলো ফুসফুসের ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে।

ভিটামিন-সি: মাল্টা, কমলা, আমলকি, পেয়ারা, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি নানা টক ফল থেকে ভিটামিন-সি পাওয়া যায়, যেগুলো ফুসফুসের প্রদাহজনিত যে কোনো সমস্যা রোধে ও শ্বাসনালীর জীবাণু ধ্বংসে সাহায্য করে।

স্বাস্থ্যকর ফ্যাট: খাবার তালিকায় অলিভ অয়েল রাখলে তা ফুসফুস ভালো রাখতে কার্যকর। ইতালির একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় কিছু পরিমাণ অলিভ অয়েল রাখলে অ্যাজমার ঝুঁকি কমায়।

ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড: আখরোট, কাঠবাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড, কুমড়ার বীজ, সামুদ্রিক চর্বিযুক্ত মাছ ইত্যাদি শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।

আপেল ও টম্যাটো: আপেল ও টম্যাটোতে বিদ্যমান এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ইউরোপিয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিয়মিত যারা আপেল খান তাদের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা তুলনামূলক কম।

ক্রুসিফেরা জাতীয় সবজি: ২০০৮-এ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পরিমিত পরিমাণে ব্রকলি, ফুলকপি, সবুজ ও বেগুনি বাঁধাকপি ইত্যাদি গ্রহণে ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

গ্রিন টি ও কফি: ২০১৭ সালে কোরিয়ান একটি গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত যারা গ্রিন টি পান করেন তাদের ফুসফুসের কার্যকারিতা যারা পান করে না তাদের তুলনায় বেশি ভালো। কফি পান করলে ফুসফুসের শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত নানা রোগ থেকে রক্ষা করে পাশাপাশি ফুসফুসের কার্যকারিতা ভালো রাখতে সাহায্য করে।

গুড় ও মধু: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, গুড় ফুসফুসকে উষ্ণ রাখতে ও বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে থাকে। আর মধু ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে কার্যকর পাশাপাশি এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি মাইক্রোবিয়াল ও এন্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করে।

মশলা: বেশ কিছু মশলা আছে যেগুলো ফুসফুসের কার্যকারিতা সঠিক রাখতে, প্রদাহজনিত সমস্যা রোধে ও নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। যেমন—কাঁচা হলুদ এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বায়ুবাহিত দূষিত কণার প্রভাব থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে।

কফ ও অ্যাজমা সমস্যা সমাধানে কার্যকর। পেঁয়াজ, রসুন ও আদা এন্টি ইনফ্লামেটরি হিসেবে কাজ করে। নানা সংক্রমণ থেকে ফুসফুসকে রক্ষা, ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন উন্নত ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। কালোজিরা এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে ও শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে কার্যকর।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: