নিজ দলের এক কর্মীকে হাসপাতালে তাঁর অসুস্থ বাবার সামনে নিজের মুখে নিজে জুতার বাড়ি মারতে বাধ্য করার অভিযোগে পদ হারালেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. আরিফুজ্জামান বিপাস।
সেই সঙ্গে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতির পদ থেকেও তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটিকে সুপারিশ করেছে জেলা কমিটি। বলে জানিয়েছে।
হোসেন সরকার নামের ছাত্রলীগের ওই কর্মীর অসুস্থ বাবা ওই ঘটনার পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
শনিবার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়াল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
হোসেন সরকারের ভগ্নিপতি মোমিনুর রহমান বলেন, হোসেন ছাত্রলীগ করেন। মাঝে কিছুদিন ঢাকায় ছিলেন। অল্প দিন হলো বাড়িতে এসেছেন। তিনি ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের বিপক্ষে ছিলেন। দুই পক্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা লেখালেখি করে। এ লেখালেখি নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফুজ্জামান ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
মোমিনুর রহমান বলেন, তাঁর শ্বশুর গিয়াস উদ্দিন সরকার গত মঙ্গলবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। হাসপাতালে বাবার পাশে ছিলেন শ্যালক হোসেন। সেখানে তাঁর শাশুড়ি খাদিজা খাতুনও (হোসেনের মা) উপস্থিত ছিলেন। পরদিন বুধবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা আরিফুজ্জামান বিপাস তিন-চারজন অনুসারী নিয়ে সেখানে যান। তাঁরা অসুস্থ বাবা ও পাশে থাকা মায়ের সামনেই হোসেনের ওপর চড়াও হন। ফেসবুকে নানা কথা লেখার প্রসঙ্গ তুলে চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি দেখে হোসেন ক্ষমা চান। একপর্যায়ে পায়ে ধরে ক্ষমা ভিক্ষা করেন। তখন ছাত্রলীগ সভাপতি নিজের পায়ের জুতা খুলে দেন। হোসেনকে হুকুম দেন নিজের মুখে জুতা মারতে। উপায় না দেখে অসুস্থ বাবার সামনেই নিজের মুখে নিজে জুতা মারেন হোসেন।
বৃহস্পতিবার হোসেন সরকারের বাবা গিয়াস উদ্দিন সরকারের অবস্থার অবনতি হলে তাঁরা যশোর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তিনি মারা যান।
মোমিনুর রহমান কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ছেলের ওপর এ নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরেই তাঁর শ্বশুর চিরদিনের মতো চলে গেলেন। তাঁরা এ ঘটনার বিচার চান।
মোমিনুর বলেন, এ ঘটনায় যে মামলা করবো সেটা করতেও খুব ভয় পাচ্ছি। ঘটনার সময় ওই ছাত্রলীগ সভাপতি নানা হুমকি দেন। এ কারণে আমরা এখনো শঙ্কিত।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: