ওসির বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ঘুষ আদায়ের অভিযোগ

সময় ট্রিবিউন | ২৬ অক্টোবর ২০২১, ০৯:২৬

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ওসি হাসান আলীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগী-ছবি সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আলীর বিরুদ্ধে বিনা দোষে নূর আলম (৩০) নামে মোটরসাইকেলের একজন মেকানিককে থানায় তুলে নিয়ে নির্যাতন ও ঘুষ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে ঘুষ দেওয়ার পর থানা থেকে ছাড়া পেয়ে ওসির বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে ও ডিআইজির কাছে অভিযোগ করায় ওসি ক্ষুব্ধ হয়ে নূর আলম, তাঁর চার ভাই ও চাচাসহ পরিবারের কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, ভাঙচুর ও লুটপাটসহ একাধিক মামলায় ফাঁসিয়েছেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

বর্তমানে নূর আলমসহ তাঁর দুই ভাই হয়রানিমূলক মামলায় কারাগারে আছেন।

সোমবার বগুড়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওসির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেন নূর আলমের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা।

সংবাদ সম্মেলনে নূর আলমের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা বলেন, তাঁর স্বামী নূর আলম একজন দরিদ্র মোটর মেকানিক। দুপচাঁচিয়া সদরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তিনি ব্যবসা করেন। তাঁর সামান্য আয়ে সংসার চলে। গত ২৯ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে তাঁর স্বামী মোটরসাইকেল গ্যারেজে কাজ করছিলেন। এ সময় দুপচাঁচিয়া থানার একজন এসআই এসে তাঁকে বিনা দোষে থানায় তুলে নিয়ে যান। এরপর ওসি হাসান আলী কোনো কারণ ছাড়াই তাঁর স্বামীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও লাঠি দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে তিনি (ওসি) ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং তা না পেলে হত্যা ও মাদকের মামলায় তাঁকে ফাঁসানোর ভয় দেখান। নিরুপায় হয়ে দেবর ফরিদের মাধ্যমে ওসির হাতে টাকা পৌঁছে দেওয়ার পর নূর আলম থানা থেকে ছাড়া পান। পরে ওসি একজন এসআইয়ের মাধ্যমে আবার ১০ হাজার টাকা দাবি করেন।

এ ঘটনায় নূর আলম গত ২৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরসহ বিভিন্ন স্থানে লিখিত অভিযোগ করেন। বিষয়টি ওসি জানতে পেরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য নানা হুমকি দেন। তাতে কাজ না হওয়ায় ১৭ অক্টোবর ওসির ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের সাজানো মামলা করান ওসি। এতে আসামি করা হয় নূর আলম, তাঁর ভাই নূর ইসলাম ও ফরিদসহ ১০ জনকে। ১৯ অক্টোবরে নূর আলম আগাম জামিন নিতে আদালতে হাজির হলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তিন ভাইকে কারাগারে পাঠান।

রাজিয়া সুলতানার অভিযোগ, এতেও ক্ষান্ত না হয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে অভিযোগ করায় ওসি প্রতিশোধ নিতে ১৯ অক্টোবর ছালমা বেগম নামে একজন নারীকে দিয়ে নূর আলম ও তাঁর তিন ভাই নূর ইসলাম, ফরিদ, রুবেল, চাচা বেলাল হোসেন ও নূর আলমের শ্যালক রাব্বীসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলায় ফাঁসিয়ে দেন। বর্তমানে নূর আলম এবং তাঁর ভাইয়েরা দুই মামলায় কারাগারে আছেন। অন্যরা পলাতক।

রাজিয়া সুলতানার দাবি, বর্তমানে ওসি এবং তাঁর লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসীরা তাঁদের পরিবারের নারী ও শিশুদের মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। ভয়ে তাঁর ১০ বছরের মাদ্রাসা পড়ুয়া শিশুর পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে।

তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে ওসি হাসান আলী বলেন, নূর আলম খারাপ প্রকৃতির মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগেই ধর্ষণ ও ভাঙচুর মামলা হয়েছে। বাদীর সঙ্গে আমার আগে থেকে কোনো যোগাযোগ নেই।

নূর আলমের বিরুদ্ধে আগে থেকে কোনো মামলা আছে কি না ওসি তা বলতে পারেননি।


আপনার মূল্যবান মতামত দিন: