মদের টাকার জন্য কিশোর গ্যাংয়ের চার জনে মিলে হত্যা করল ইজিবাইক চালক শাকিলকে

সময় ট্রিবিউন | ২২ মে ২০২৩, ০১:২০

ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার মঠবাড়ি এলাকায় ইজিবাইক চালক শাকিল(১৮) হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ মে) রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা–পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হল- সাব্বির হোসেন মেহেদী (২২), ইব্রাহিম চান (২১), জনি (২০) ও শারাফাত (২০)। পরে গ্রেপ্তার আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি রক্তমাখা সুইসগিয়ার চাকু, আসামিদের ব্যবহৃত রক্তমাখা সিএনজি ও ইজিবাইক জব্দ করে পুলিশ।

২১ মে দুপুরে রাজধানীর পুরান ঢাকার জনসন রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গেল শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে স্থানীয়রা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ফোন করে জানান, মঠবাড়ী পদ্মা রেলওয়ে সেতুর নিচে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের পরিত্যক্ত ইটের খোলার ভেতরে একটি গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। মৃতদেহটি একই ইউনিয়নের পালিরা গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে শাকিলের (১৮)। পরিবারের সদস্যরা মরদেহ শনাক্ত করেন।

জানা যায়, শাকিল দশম শ্রেণির ছাত্র। নিজের পড়াশোনা, মায়ের চিকিৎসা ও সংসারের খরচ মেটাতে শাকিল স্কুল শেষে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ইজিবাইক চালাত। প্রতিদিনের মত বৃহস্পতিবার বিকেলেও সে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়। কিন্তু রাতে আর বাসায় ফেরেনি সে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে শাকিলের বড় বোন সীমা (২৪) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িতরা নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য ও সবাই মাদকাসক্ত। মদের টাকা জোগাড় করতেই তারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায় তারা।

বৃহস্পতিবার তারা পরিকল্পনা করে একটি ইজিবাইক ছিনতাই করে সেটার ব্যাটারি বিক্রি করে মদের পার্টি করবে। অনেক্ষণ অপেক্ষার পর অবশেষে তারা শাকিলকে পেয়ে যায়। শাকিল ঘাতকদের একজন জনির পূর্ব পরিচিত ছিল। পরে জনি, শারাফাত ও সাব্বির শাকিলের গাড়িতে উঠে মঠবাড়ী পরিত্যক্ত ইটখোলায় যান। অপরদিকে ইব্রাহিম চান সিএনজি নিয়ে পিছু পিছু যান। পৌঁছানো মাত্রই পূর্বপরিকল্পনা মাফিক শরাফাত সুযোগ বুঝে সুইসগিয়ার দিয়ে শাকিল এর গলায় টান দেয়। এতে শাকিল ইজিবাইক থেকে পড়ে যায় এবং গলা চেপে ধরে চিৎকার শুরু করে। তখন জনি পেছন থেকে শাকিলের পিঠে এলোপাথাড়ি চাকু মারতে থাকে। কিন্তু তারপরও শাকিল চিৎকার ও দাপাদাপি করতে থাকলে জনি, সাব্বির এবং ইব্রাহিম চান শাকিলের মাথা ও হাত-পা চেপে ধরে এবং শরাফাত শাকিলকে সুইসগিয়ার দিয়ে মাথার সামনে-পেছনে জবাই করে মাথা প্রায় বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর শরাফত, জনি ও ইব্রাহিম চান সিএনজিতে করে চলে যায় এবং সাব্বির ওদের পেছন পেছনে মৃত শাকিলের ইজিবাইক চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: