২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার একটি আদালত অভিযোগ গঠন করেছে।
মামলায় জামিনে থাকা শতাধিক আসামির দোষ স্বীকারের প্রেক্ষিতে সোমবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
১৯৮০ সালের পাবলিক পরীক্ষা আইনে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় ২৬ আসামির অনুপস্থিতিতে সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
ম্যাজিস্ট্রেট মামলার বিচার শুরুর জন্য ৩০ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।
২০১৯ সালের ২৩ জুন, অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমন কুমার দাস ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
তদন্তের সময়, সিআইডি ১২৬ সন্দেহভাজনদের মধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল, যার মধ্যে অভিযুক্ত মাস্টারমাইন্ড, বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্টানের (বিকেএসপি) বরখাস্ত সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস আছেন।
তাদের মধ্যে ৪৬ জন ইতিমধ্যে ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে বিভিন্ন তারিখে তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'ঘ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ঘন্টা দুয়েক আগে ঢাবির দুটি ছাত্রাবাসে প্রথম অভিযান চালায় সিআইডি। সেদিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা এবং ছাত্রলীগের অমর একুশে হল শাখার নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
গ্রেপ্তার হওয়া দুই ছাত্রলীগ নেতাকেই ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করেছিল।
এর আগে, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও কারচুপির অভিযোগে বহিষ্কার করে।
সে সময় চাকরি ও ভর্তি প্রত্যাশীদের বিশেষ শ্রবণ যন্ত্রের (ইয়ার পিস) মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রশ্নের উত্তরগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারী চক্র মুম্বাই থেকে প্রায় ১০০টি ডিজিটাল যোগাযোগের ডিভাইস সংগ্রহ করে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
২০১৭ সালে একই চক্র রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি ছাপাখানা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁস করে।
নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে এই চক্রের কয়েকজন সদস্য ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস করতেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ১২৬ জনের মধ্যে ১০৪ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের আওতায় আরও একটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এই মামলাটি বর্তমানে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: