অন্যায়ের প্রতিবাদ মুসলিম জাতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য, অন্যায়ের সমর্থন করা মহা অন্যায়

ইসলাম ডেস্ক | ১৯ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০২

সংগৃহীত ছবি

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মতকে যেসব কারণে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে তার অন্যতম একটি হলো অন্যায়ের প্রতিবাদ। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণেই তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমরা সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অন্যায় কাজে বাধা প্রদান করবে।’ (সূরা আল ইমরান, (৪), আয়াত, ১১০)

আল্লাহ তায়ালা অন্যায়ের প্রতিবাদকে মুসলিম জাতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে গণ্য করেছেন। যেকোনো অন্যায়ের সামনে নীরব ভূমিকা ইসলাম কখনোই সমর্থন করে না, বরং নিজ সাধ্য ও সামর্থ্যরে আলোকে এসব অন্যায়-অপরাধের প্রতিবাদ করা এবং তা নির্মূলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা ঈমান ও ইসলামের অপরিহার্য দাবি।

আবু সায়িদ খুদরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ কোনো অন্যায় হতে দেখলে যেন হাত দিয়ে তা প্রতিহত করে। যদি তা না পারে, তবে কথা দিয়ে; তাও না পারলে অন্তর দিয়ে (ঘৃণা করবে)। এটি ঈমানের দুর্বলতম স্তর।’ (মুসলিম, হাদিস, ৭৪)

আরেক হাদিসে হুজাইফা ইবনুল ইয়ামান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার হাতে আমার জীবন তাঁর শপথ করে বলছি, ‘তোমরা অবশ্যই ভালো কাজে মানুষকে আদেশ দেবে এবং অবশ্যই অন্যায় থেকে নিষেধ করবে। যদি তা না করো তা হলে আল্লাহ তোমাদের ওপর তার পক্ষ থেকে শাস্তি প্রেরণ করবেন। এরপর তোমরা তার নিকট প্রার্থনা করলেও তিনি কবুল করবেন না’ (তিরমিজি, হাদিস, ৪০৬)।

অন্যায় ও অত্যাচারের প্রতিবাদ না করলে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ধ্বংস অনিবার্য। এক হাদিসে নুমান ইবনে বাশির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যারা মহান আল্লাহর নির্ধারিত সীমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং যারা সীমা লঙ্ঘন করে, তাদের দৃষ্টান্ত সেই যাত্রীদলের মতো, যারা লটারির মাধ্যমে দ্বিতল বিশিষ্ট এক জাহাজে নিজেদের স্থান নির্ধারণ করে নিল। তাদের কেউ স্থান পেল ওপর তলায় আর কেউ নিচ তলায়। আর পানির ব্যবস্থা ছিল ওপর তলায়। কাজেই নিচের তলার লোকেরা পানি সংগ্রহকালে ওপর তলার লোকদের ডিঙিয়ে যেত। তখন নিচ তলার লোকেরা বলল, ওপর তলার লোকদের কষ্ট না দিয়ে আমরা যদি নিজেদের অংশে একটি ছিদ্র করে নিই তবে ভালো হয়। এমতাবস্থায় ওপর তলার লোকেরা যদি তাদের আপন মর্জির ওপর ছেড়ে দেয় তা হলে সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যদি তারা এদের হাত ধরে রাখে (বিরত রাখে) তবে তারা এবং সবাই রক্ষা পাবে।’ (বুখারি, হাদিস, ২৪৯৩)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: