আলালকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে গণধোলাই দেওয়া হবে: ছাত্রলীগ সভাপতি

ঢাবি প্রতিনিধি | ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৩৭

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে বিএনপির একটি আলোচনা সভায় কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানে গণধোলাই ও জুতাপেঠা করা হবে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মন্তব্যের প্রতিবাদে ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এবং বিভিন্ন সময় ছাত্রশিবির-ছাত্রদলের হামলায় নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগকর্মী শহীদ ফারুক হোসেন, বুয়েট ছাত্রলীগকর্মী শহীদ আরিফ রায়হান দ্বীপ, বুয়েট ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি, চট্টগ্রামের বাকলীয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মী হত্যার রায় দ্রুত ঘোষণার দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল এবং বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এ মন্তব্য করেন জয়।

এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা 'আলালের চামড়া, তুলে নিবো আমরা' ' জামাত-শিবির রাজাকার, এই মুহুর্তে বাংলা ছাড়' ' আলালের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে' ইত্যাদি স্লোগান দেন।

সমাবেশে শেষে মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এবং তাঁর প্রতিকৃতি বানিয়ে জুতা পেঠা ও ঝাঁড়ুপেঠা করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

সমাবেশে আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, " বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আছে বিধায় জঙ্গিবাদ মাথাছড়া দিতে পারছে না। শান্তিতে দেশের জনগণ ঘুমাতে পারছেন। বিএনপি-জামাত জোটের সময় কোন নৈতিকতা ছিল না। সেজন্য বিএনপি-জামাতের সাথে কোন আপোষ চলবে না। তারা পাকিস্তানের প্রেতাত্মা। বর্তমানে শেখ হাসিনার আমলে আইনের শাসন চলছে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। যেকোনো অন্যায়কারী সে যেইহোক তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। তবে ছাত্রলীগের নাম শুনলে যাদের চুলকানি উঠে তাদেরকে বলি এই ছাত্রলীগ না থাকলে শান্তিতে ঘুমাতে পারতেন না।

তিনি আরো বলেন, এই আলালরা(মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল) মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিল! এই আলাল প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যেভাবে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছে সেটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের রায়ের কথা উল্লেখ করে জয় বলেন, আমরা মনে করি উচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পাবে।পাশাপাশি যারা ঐ সময়ে ঘটনাস্থলে ছিল না তারা যেন শাস্তির আওতায় না আসে সেটাও বিজ্ঞ আদালতকে বিবেচনায় নিতে হবে। পাশাপাশি আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যে ৯ জন বুয়েটের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে তা পূণর্বিবেচনা করার আহবান জানান জয়।

লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বুয়েটের আবরার হত্যার ঘটনার যে রায় গতকাল দিয়েছে, সে আবরার হত্যার পর সর্বপ্রথম ছাত্রলীগই ঢাকা শহরে শোক মিছিল বের করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শক্ত নির্দেশনার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলের দ্রুত বিচার কার্য সম্পাদন করেছেন। বুয়েটের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করে দেখি একই দেশে দুজন শিক্ষার্থীর জন্য, একই প্রতিষ্ঠানের দুজন শিক্ষার্থীর জন্য কেন দুটি আইন বলবৎ থাকবে।

তিনি আরো বলেন, ২০১৩ সালে বুয়েট ছাত্রলীগের কর্মী আরিফ রায়হান দ্বীপকে শিবিরের নেতাকর্মীরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল সে মামলার রায়ের কী অবস্থা? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী শহীদ ফারুক হোসেন, বুয়েট ছাত্রী সাবিকুন নাহার সনি, চট্টগ্রামের বাকলিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ৮ নেতাকর্মী হত্যার রায়ের কী অবস্থা? একই দেশে একটি ছাত্র সংগঠনের জন্য একটি আইন, আরেকটি ছাত্র সংগঠনের জন্য আরেকটি আইন হবে কেন?

আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেখাতে পারবেন না বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী কিংবা অন্য কারো স্বার্থ বিরোধী আচরণ করে! ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন লেখক ভট্টাচার্য।

সমাবেশে কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তাঁর হল ও রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: