সাম্প্রদায়িক শক্তি বিষধর সাপ; যেকোনো সময় ছোবল মারতে পারে: কাদের

সময় ট্রিবিউন | ১৭ অক্টোবর ২০২১, ২২:৪০

ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রদায়িক শক্তি বিষধর সাপ ; যেকোনো সময় এ সাপ ছোবল মারতে পারে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ ( ১৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত ' স্বপ্ন ও সম্ভাবনার স্ফুলিঙ্গ- শেখ রাসেল' শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা বৃত্তি, শিক্ষা উপকরণ ও দরিদ্র তহবিলে বিশেষ অনুদান প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, একাত্তরে যারা পরাজিত হয়েছিলো তারাই পচাত্তরের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করেছিলো। দেশি বিদেশি চক্র একটি নীল নকশার মাধ্যমে। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের চেতনাতে তারা আঘাত হেনেছিলো। আঘাত হেনেছিলো মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনায়। সেই শক্তি বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছরে বিষবৃক্ষ ডালপালা বিস্তার করেছে। এদের ডালপালা আজকে অনেক দূর চলে গেছে। এদের শেকড়ও চলে গেছে মাটির অনেক গভীরে। মাঝে মাঝে মনে হয় এ শক্তি নিষ্ক্রিয়। আসলে তলে তলে এরা সক্রিয়। সুযোগ পেলে ছোবল মারে। এ সাম্প্রদায়িক শক্তি বিষধর সাপ। সুযোগ পেলেই ছোবল মারে। এবারের দুর্গাপূজাতে আমরা সে দৃশ্য দেখেছি।

তিনি আরো বলপন, "শেখ হাসিনা সরকারের গত ১২ বছরে দেশের ৩০-৩৫ হাজার পূজামণ্ডপে কোথাও কোন ধরণের হামলা হয় নি। এবারে সাম্প্রদায়িক শক্তি নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত জেনে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা বিএনপি।"

পত্র-পত্রিকায় মাঝে মাঝে দেখ যায় জামায়াত-বিএনপি আলাদা হয়ে যাচ্ছে। দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এটা আসলে কিছুই না। গোপনে গোপনে তাদের যে পিরিতি রয়েছে তা আর কারো নেই। গুজবের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করার একটি প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছুই নয় বলে উল্লেখ করেন সেতুমন্ত্রী।

বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দেশকে অনেকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠছে তাই এ শক্তির মোকাবিলা করার জন্য চোখ কান খোলা রেখে ছাত্রলীগকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান ওবায়দুল কাদের।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বডুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মো.মোজাফফর হোসেন,বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। শেখ রাসেলের জীবনীর উপর অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-এর পরিচালক অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ আবদুল হালিম।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ আ.লীগের ত্রান ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তাঁর হলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি শিশু শেখ রাসেলও। সেসময় ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলো সে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট ছেলে শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মদিন ১৮ অক্টোবর।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটভাই শেখ রাসেল ১৯৬৪ সালের এইদিনে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু ঘৃণ্য ঘাতকদের নির্মম বুলেট থেকে রক্ষা পায়নি শিশু শেখ রাসেলও। বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নরপিশাচরা নির্মমভাবে তাকেও হত্যা করেছিল। রাসেল তখন ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলো।

সেদিন না মারার জন্য খুনিদের কাছে আর্তি জানিয়েছিলো শেখ রাসেল। চিৎকার করে বলেছিলো, “আমার হাসু আপা দুলাভাইয়ের সঙ্গে জার্মানিতে আছেন। আমি আপনাদের পায়ে পড়ি, দয়া করে আপনারা আমাকে জার্মানিতে তাদের কাছে পাঠিয়ে দিন।”

সেদিন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র রাসেলের এই আর্তচিৎকারও টলাতে পারেনি খুনি পাষাণদের মন। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যের মত এই নিষ্পাপ শিশুকেও ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: