আ.লীগের সভায় চেয়ার–ছোড়াছুড়ি, আহত ১৫

সময় ট্রিবিউন | ২ অক্টোবর ২০২১, ০৫:৫৯

রাজশাহীর তানোরে আওয়ামী লীগের সভায় দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ি। শুক্রবার বিকেলে-ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর তানোর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের মনোনয়নপ্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীর তালিকা করার সভায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার–ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

আহত নেতা-কর্মীরা তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রাজশাহীতে বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়েছেন।

শুক্রবার বিকেলে তানোর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরোধ রয়েছে। এই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফারুক চৌধুরীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এখনো তাঁদের দূরত্ব ঘোচেনি। আগামী ১১ নভেম্বর তানোর উপজেলার সাতটি ইউপির নির্বাচন হবে। এ জন্য জেলা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। এই কমিটি বিভিন্ন ইউনিয়নের তালিকা সংগ্রহ করছে। আগামীকাল শনিবার তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর শেষ তারিখ।

সাতটি ইউপিতে মনোনয়নপ্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের তালিকা সংগ্রহের জন্য আজ বিকেল চারটায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সভা আহ্বান করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একরামুল হক। এই অনুষ্ঠানে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী অনুপস্থিত ছিলেন। তবে সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁর সমর্থকদের নিয়ে যান।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাকিবুল সরকার বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন এসে অনুষ্ঠানে বসার চেয়ার পাচ্ছিলেন না। অথচ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে যিনি ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছিলেন, তিনি নেতাদের সঙ্গে চেয়ারে বসে ছিলেন। তাঁকে চেয়ারটি সাধারণ সম্পাদককে ছেড়ে দিতে বললেও তিনি বসেই ছিলেন। এ নিয়ে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে চেয়ার–ছোড়াছুড়ি শুরু হয়। মাইকে সবাইকে শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও কাউকে থামানো যায়নি। একপর্যায়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা বেরিয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হন। পরে তালিকার কাজ সম্পন্ন করা হয়।

রাকিবুল সরকার আরও বলেন, চেয়ারের আঘাতে তাঁর একটি আঙুল কেটে গেছে। সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের পায়ে লেগেছে। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে দুই পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী দাবি করেছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ জন্য তিনি সেখানে যাননি। তাঁর কমিটির সাধারণ সম্পাদক গিয়েছিলেন। তাঁকে বসতে দেওয়া হয়নি। পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে, যাতে তাঁদের অনুসারীরা কেউ তালিকায় নাম দেওয়ার সুযোগ না পান।

জানতে চাইলে অনুষ্ঠানের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একরামুল হক বলেন, চেয়ারে বসা নিয়ে সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনের সমর্থকেরা ঝামেলার সূত্রপাত করেন। তবে বড় কিছু হয়নি। চেয়ার–ছোড়াছুড়ির পর তাঁরা বের হয়ে যান। তখন তাঁরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই তালিকা তৈরি করেছেন।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: