বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিউইয়র্ক সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো ‘সফলতা’ নেই ।
নিউইয়র্ক সফরে প্রধানমন্ত্রীর কী অর্জন সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে বিএনপি মহাসচিব এরকম মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, অর্জন তার একটাই তা হলে আরো মিথ্যাচার কীভাবে করা যায়। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন তার গোটা বক্তৃতার মধ্যে দেশে যে গণতন্ত্র নাই, দেশে যে মানুষের অধিকারগুলো হরণ করা হয়েছে, দেশে যে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ ধবংস করে দেয়া হয়েছে এবং একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য যে সমস্ত উপাদান দরকার তার প্রত্যেকটিকে ধবংস করে দিয়ে এখানে সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই অবস্থা থেকে কিভাবে উনি দ্রুত সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করবেন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পরিণত করবেন, জনগনের এখন যে দুর্ভোগ, অসহায় অবস্থা কীভাবে দূর করবেন সেই সম্পর্কে তিনি কোনো কিছু উল্লেখ করেননি।
এখানে (প্রধানমন্ত্রীর নিউইর্য়ক সফরে) আমি কোনো কোনো আউটকাম পাইনি। এমনকি রোহিঙ্গাদের যে সমস্যা সেই সমস্যারও তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোনো সমাধান নিয়ে আসতে পারেননি। আমরা যেটা মনে করি যে, রোহিঙ্গা ইস্যুকে এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী বলুন, এই সরকার বলুন তারা কোনো ইতিবাচক ভুমিকা পালন করেনি। এখন পর্যন্ত শুধূ রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তারা দেশগুলো সফর করেনি, বিশেষ করে যারা স্ট্যাক হোল্ডার আছে যে দেশগুলো যেমন চীন ও ভারত তাদের কাছে তারা(সরকার) এখন পর্যন্ত যেতে পারেনি এবং এই সমস্যার কোনো সমাধান কোনো পথ তারা বের করতে পারেনি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শুক্রবার তিনি অধিবেশনের ভাষণ দেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে এই অধিবেশন শুরু হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যু জিইয়ের রেখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহমর্মিতা নিচ্ছে কিনা প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনি সঠিকভাবেই বলেছেন। এই ইস্যুটাকে জিইয়ের রে্খে তারা আন্তর্জাতিক যে সুবিধা সেই সুবিধাগুলো গ্রহন করতে চায় পশ্চিমা বিশ্বের।
তিনি বলেন, তার (শেখ হাসিনা) সম্পর্কে যেসমস্ত বক্তব্য পত্র-পত্রিকায় মিডিয়াতে উঠে এসেছে তা খন্ডন করার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা উনি বলেছেন যার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যেটা সব সময় প্রত্যাশা করি যে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়ার জন্য জনগনের যে অধিকার, তার ভোটের যে অধিকার, তার বাকস্বাধীনতার যে অধিকার, তার বেঁচে থাকবার যে অধিকার তা নিশ্চিত করবার জন্যে তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। তারা সত্যিকার অর্থেই এখানে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় তারা নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন যাতে সত্যিকারভাবে জনগনের পার্লামেন্ট ও জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা হতে পারে।
কৃষক দলের নবগঠিত কমিটির কাছে প্রত্যাশা রেখে তিনি বলেন, বর্তমানে যে একটি ফ্যাসিস্ট দানবীয় সরকার নির্বাচন না করেই ক্ষমতা দখল করে আছে, তাদেরকে সরিয়ে দেয়ার জন্য জনগনের মধ্যে একটি আন্দোলন ও একটা গণঅভ্যুত্থানের জন্য কাজ করতে হবে আমাদের সকলকে। ইনশাল্লাহ আমরা সেটা করতে সক্ষম হবো কৃষক দলের নবগঠিত কমিটির নেতৃত্বের মাধ্যমে।
কৃষক দলের নবগঠিত কমিটির সভাপতি হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলসহ নেতা-কর্মীদের নিয়ে সকাল সাড়ে ১১টায় চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করেন বিএনপি মহাসচিব।
এ সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, কৃষক দলের নতুন কমিটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, সহসভাপতি গৌতম চক্রবর্তী, যুগ্ম সম্পাদক টিএস আইয়ুব, মোশাররফ হোসেন ও দফতর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর কৃষক দলের ৭ সদস্যের আংশিক কমিটি অনুমোদন দেয় বিএনপি। ২২ বছর পর গত ১২ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠান হলেও দীর্ঘ পাঁচ মাস পরে এই আংশিক কমিটি পেলো কৃষক দল।
সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে গঠিত কমিটির সভাপতি ছিলেন মাহবুব আলম তারা এবং সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: