গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করাই বিএনপি চ্যালেঞ্জ: ফখরুল

সময় ট্রিবিউন | ১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২২:১৪

ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এখন বিএনপির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দেশে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা এবং গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা।

বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। এই দীর্ঘ ৪৩ বছরে বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমূল ও মৌলিক পরিবর্তন এনেছে। এক দলীয় স্বৈরাচার শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তন করেছে। পরবর্তীতে গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াতে নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতিশাসিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এসেছে।’

তিনি বলেন, রাজনীতিতে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার ফলে বাক স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার এবং সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা যে হরণ করা হয়েছিল। সেগুলোকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের কাঠামো তৈরি করেছিলেন। আজকে বাংলাদেশের অর্থনীতির যেটুকু অগ্রগতি হয়েছে, তার ভিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাতেই স্থাপিত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এ জাতি যে অধিকারগুলো অর্জন করেছিলো সে অধিকারগুলো তারা হারিয়ে ফেলেছে। আজকে জনগণ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে নির্বাচন হয় না। নির্বাচন কমিশন একটি আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। পুরো প্রশাসনকে দলীয়করণ করা হয়েছে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করা হয়েছে। সার্বিক অর্থে ছদ্ববেশী একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা দেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

জিয়াউর রহমানের সমাধীর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘এ ধরণের প্রশ্নের উত্তর দিতে আমাদের অনেক ছোট মনে হয়, নিকৃষ্ট লাগে, রুচিতে বাধে। স্বাধীনতা ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সম্পর্কে যখন এ ধরণের কথা বলা হয়, তখন এটি আমাদের দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু না। পরিষ্কার কথায় বলতে চাই, জিয়াউর রহমান জাতির অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছেন।’

মুক্তিযোদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘তাকে তার নিজের চ্যালেঞ্জ নিতে বলেন। তিনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন কিনা সেটা আগে প্রমাণ করুক।’

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দলের প্রতিষ্ঠাতার মাজারে আসতে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, “আমাদের লজ্জা হয়, দুঃখ হয়। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে আমরা যখন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে আসি তখন আমাদেরকে বাধা দেওয়া হয়। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালানো হয়। আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। আজকে এখানে ৩০ জনের বেশি আসা যাবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এই এলাকায় নাকি আরো বড় নিরাপত্তা বলয়ে চলে গেছে। তারা সম্পূর্ণভাবে বাধার সৃষ্টি করছে।”

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অভিযোগের ব্যাপারে মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রুবাইয়াত জামান জানান, “আজ জাতীয় সংসদের অধিবেশন রয়েছে। ফলে সে অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর উপলক্ষে চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রবেশে কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। এমনকি চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির কতজন প্রবেশ করতে পারবে, তাও লিখিতভাবে কিছু বলা হয়নি।”

শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: