গার্মেন্টস খোলা ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, পুরো বিষয়টা দেশের স্বার্থে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস মালিকরা যেটা বলেছিলেন তারা ঢাকার আশেপাশে যারা শ্রমিকরা আছে তাদেরকে নিয়েই আপাতত শুরু করবেন, কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোন কোন গার্মেন্টস মালিক সেটার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। আমি মনে করি এক্ষেত্রে গার্মেন্টস মালিকদের আরেকটু সচেতন... সবাইকে আমি দোষ দিব না, কিন্তু যারা শ্রমিকদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন কাজে যোগদান করতেই হবে সেই বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে একটু ভুল ছিল।
সোমবার (০২ আগস্ট) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।
গার্মেন্টস খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্তটা কার? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে দাবি সরকারের কাছেই করা হয়েছে, সরকারের পক্ষ থেকে কে বসবে সেটা বিষয় নয়, সরকারের কাছে এই দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। কোনো সচিবের সাথে বসলে সিদ্ধান্তটা সচিবের নয় সিদ্ধান্তটা সরকারের। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত হয়। এক্ষেত্রে কোনো সিদ্ধান্ত কোনো ব্যক্তি বা সচিবদের না এটা সরকারেরই সিদ্ধান্ত হয়, কার সাথে বসেছেন সেটা বিষয় নয়। যে কারো সাথেই বসতে পারে।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই দাবি ছিল যে ১ আগস্ট থেকে খুলে দেবার জন্য। কিন্তু সরকার নানা দিক বিবেচনা করে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সর্বাত্মক লকডাউন দিয়েছে, সরকার এই ঘোষণা দেয়নি যে এটি কখনো শিথিল করা হবে না? লকডাউন দেবার পর সপ্তাহে সপ্তাহে বৃদ্ধি করা হচ্ছিল এবার দুই সপ্তাহ একসাথে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে গার্মেন্টস মালিকরা যেটা বলেছিলেন তারা ঢাকার আশেপাশে যারা শ্রমিকরা আছে তাদেরকে নিয়েই আপাতত শুরু করবেন, কিন্তু এ ক্ষেত্রে কোন কোন গার্মেন্টস মালিক সেটার ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। তাদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের কে ফোন করা হয়েছে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য, অর্থাৎ যারা ঢাকার বাইরে চলে গেছেন তাদের আসতে বলা হয়েছে। গার্মেন্টস মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল ঢাকার আশেপাশে বা ঢাকায় অবস্থানরত যে সমস্ত শ্রমিকরা আছে তাদেরকে দিয়েই আপাতত শুরু করবে, এখানেই বিভ্রান্তিটা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের সুবিধার্থে বা গার্মেন্টসে যারা কাজ করেন তাদের সুবিধার্থে গণপরিবহন চালু করা হয়েছিল কয়েক ঘণ্টার জন্য।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এক্ষেত্রে গার্মেন্টস মালিকদের আরেকটু সচেতন...সবাইকে আমি দোষ দিব না, কিন্তু যারা শ্রমিকদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছেন কাজে যোগদান করতেই হবে সেই বার্তা পাঠানোর ক্ষেত্রে একটু ভুল ছিল।
তিনি আরও বলেন, জীবন এবং জীবিকা দুটোর মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে হয়। ভারতের অবস্থা দেখেন লকডাউন দিয়ে মাসের পর মাস বন্ধ থাকার পর জিডিপির প্রবৃদ্ধি -১০ ছিল গত অর্থবছরে। আমাদের দেশে জীবন এবং জীবিকার মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার প্রেক্ষিতে গত অর্থবছরে আমাদের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ। সেটি আমরা সফল ভাবেই করেছি। আমাদের অর্থনীতি অনেকটাই গার্মেন্টসের ওপর নির্ভরশীল। রফতানি আয়ের ৮০ ভাগ বা তার বেশি গার্মেন্টস থেকেই আসে। গার্মেন্টসটা অত্যন্ত সেনসিটিভ খাত, সেখানে যদি এক সপ্তাহ ডেলিভারি দিতে না পারে বা এক সপ্তাহ দেরি হয় তাহলে কার্যাদেশ বন্ধ হয়ে যায়, দেশ ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, সেই বিষয়টাও দেখতে হবে। সুতরাং এটি ব্যবসায়িক স্বার্থে নয়, পুরো বিষয়টা দেশের স্বার্থে করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: