বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মহানুভবতা দেখিয়ে কারাগারের বাইরে রাখা ভুল হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া আদালত কর্তৃক জামিন না পাওয়া সত্বেও বা আদালত কর্তৃক নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া সত্বেও তাকে যে মহানুভবতা দেখিয়ে কারাগারের বাইরে রাখা হয়েছে। মনে হয় সেটি ভুল হচ্ছে আমাদের। এখন সেটি আবার পুনর্বিবেচনা করতে হবে এবং বেগম খালেদা জিয়া আসলে আইন অনুযায়ী আবার জেলখানায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে কিনা সেটি একটু চিন্তাভাবনা করতে হবে।
সোমবার (০৫ জুলাই) মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের নব নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। এসময় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেন, বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক, সহ সভাপতি মোতাহার হোসেন, সহ সাধারণ সম্পাদক মেহেদী আজাদ মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আকতার হোসেন, অর্থ সম্পাদক শফিউল্লাহ সুমন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক মোশকায়েত মাশরেক, প্রচার ও প্রকাশন সম্পাদক বাহারাম খান ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন রাসেল, মাইনুল হোসেন পিন্নু, শাহজাহান মোল্লা, হাসিব মাহমুদ শাহ, শাহাদাত হোসেন রাকিব ও বেলাল হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী মহানুভবতায় কারাগারের বাইরে আছে সেজন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো প্রয়োজন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির দুইজন সদস্য পদত্যাগ করার পর বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, মিস্টার আলমগীর সাহেব কয়েকদিন আগে পলায়ন নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। বিএনপি থেকে যেভাবে দুজন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদত্যাগ করল তা দেখে মনে হচ্ছে বিএনপি থেকে এখন পলায়ন শুরু হয়েছে। তিনি (বিএনপি মহাসচিব) যে মহতা নদীর কথা বলছেন বিএনপি একসময় মহতা নদীই ছিল। সেই মহতা নদী এখন শুকিয়ে গেছে, মরে গেছে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নিয়ে কথা বলার পর বিএনপি মহাসচিব সেই বক্তব্যকে শালীনতা বিবর্জিত বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু অপ্রিয় সত্যকথা সংসদে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জিয়াউর রহমান অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখল করে তারপর ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিয়ে দল গঠন করেছিল। ক্ষমতায় থেকে উচ্ছিষ্ট নিয়েই দল গঠন করে তিনি রাজনীতি করেছেন। অর্থাৎ এ রাজনৈতিক দলটির জন্মই হচ্ছে অবৈধ। হাইকোর্টেও রায়ে বলেছেন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিয়ে যে দল গঠন করা তারা তো একথা বলতেই পারেন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট নিয়ে কথা বলায় ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের গাত্রদাহ হচ্ছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির প্রথম সারির নেতারা সবাই অন্য দল করেছে। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রিজভী আহমেদসহ সবাই বিএনপিতে যোগ দিয়েছে। এটি বলাতে তাদের গাত্রদাহ হয়েছে। আসলে বিএনপি সত্যটাকে মেনে নেওয়া প্রয়োজন। অসত্যের ওপর দাঁড়িয়ে বেশিদিন টিকে থাকা যায় না।
তিনি বলেন, আর শালীনতা, বেগম খালেদা জিয়া তাদের নেতা নেত্রীদেরকে একটু শালীনতা শেখানোর জন্য বলব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে বেগম খালেদা জিয়াকে যখন ফোন করেছিলো তখন কি রকম অশালীন ভাষায় বেগম খালেদা জিয়া কথা বলেছিল দেশবাসী দেখেছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় পুত্র কোকোর মৃত্যুর পর সমবেদনা জানাবার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ খালেদা জিয়ার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলো ২০ মিনিট কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া দরজা খুলেন নাই। এটা কেমন শালীনতা? কেমন অশালীনতা? যারা এরকম অশালীন আচরণ করে তাদের মুখে শালীনতা শব্দ মানায় না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে সত্য বলেছেন বিধায় তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। বিএনপিকে সত্যটাকে মেনে নেওয়া দরকার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: