‘৩৩৩’ নম্বরে খাদ্য সাহায্যের জন্য কল দিয়ে উল্টো জরিমানা দেওয়া সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ ফরিদ আহমেদের পাশে দাঁড়ালেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি গোলাম রব্বানী।
মহামারি শুরুর আগে তার সংসার মোটামুটি ভালোভাবেই চলছিল। কিন্তু করোনার দুঃস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে খাদ্য সহায়তা চেয়ে ‘৩৩৩’ এ কল করেছিলেন ফরিদ। কিন্তু সেটা যে বুমেরাং হবে তা আগে কল্পনাও করেননি।
ইউএনও’র নির্দেশে ১০০ জনকে খাদ্য সহায়তার জন্য টাকা যোগাড় করতে নিজের ও ভাইয়ের স্ত্রীর স্বর্ণালঙ্কার বন্ধক দিতে হয়েছে ফরিদ উদ্দিনকে। এ কষ্টে তিনি আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছেন। পরে ২২ মে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা যোগাড় করে তিনি ১০০ জনকে খাদ্য সহায়তা করেন।
এমন ঘটনা জানার পর সেই বৃদ্ধের বাড়িতে তিন মাসের খাবার নিয়ে হাজির হলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও টিম পজিটিভ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম রাব্বানী।
বুধবার (২৬ মে) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার দেওভোগ নাগবাড়ি এলাকায় ফরিদ উদ্দিনের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ১০০ কেজি চাল, ৬০ কেজি আলু, ২৫ কেজি ডাল, ৮ কেজি তেল নিয়ে হাজির হন তিনি। এ সময় নগদ ৫ হাজার টাকাও সহযোগিতা করেন তিনি।
গোলাম রাব্বানী বলেন, আজ ফরিদ চাচার বাড়িতে গিয়ে আমিও বাস্তবতা দেখে এসেছি, Team Positive Bangladesh (TPB) এর পক্ষ থেকে ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভালোবাসার উপহার’ হিসেবে খাদ্য সহায়তা (১০০ কেজি চাল, ৬০ কেজি আলু, ২৫ কেজি ডাল, ৮ কেজি তেল) ও নগদ ৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।
আর এই দুর্যোগময় সময়ে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে প্রকৃত অসহায় কেউ যদি ৩৩৩ তে ফোন করে মাঠ প্রশাসনের দায়িত্ব অবহেলায় খাদ্য সহায়তা না পান, Team Positive Bangladesh - TPB কে জানান। আমরা সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।
ফরিদ আহম্মেদ কারখানায় কাজ করে মাসে সাকুল্যে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। স্ত্রী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে ও কলেজ পড়ুয়া মেয়ে তার আয়ের ওপর নির্ভরশীল।
পরে এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশ জুড়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। জেলা প্রশাসক ইউএনওকে ত্রাণ তহবিল থেকে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে বুধবারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। পরে ফরিদ আহম্মেদকে জরিমানার টাকা আমি ফেরত দেওয়া হয়।
ফরিদ আহম্মেদ বলেন, ‘মান সম্মান শেষ। মনের ভেতর একটা অশান্তি বোধ করছি। এর জন্য আমি লজ্জিত। এ ঘটনার পর আত্মীয়-স্বজন কেউ আমার বাড়িতে আসে নাই। আমার আত্মীয়-স্বজনরা ফোনে বলতেছে মানসম্মান সব শেষ। মানসম্মান শেষ হলে আমার কি করার আছে? আমি তো চুরি করি নাই, আমি মার্ডারও করি নাই, ডাকাতিও করি নাই।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: