সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণা ছড়িয়ে দিতে নতুন ৬ লাখ স্মার্ট কর্মী মাঠে নামাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য তাদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেছে দলটি। যাদের প্রধান কাজ হবে সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো গ্রাফিক্সসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার (এক্স) হেন্ডেলে ও ইনস্ট্রাগ্রামে ছড়িয়ে দেয়া।
চলতি মাসের ২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার অনলাইনের মাধ্যমে সারাদেশে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করবে দলটির কেন্দ্র।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে, সরকার পতনে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ঠেকাতে মাঠেও শক্তিশালী অবস্থান গড়তে বিভিন্ন কর্মসূচি দিচ্ছে দলটি।
এছাড়াও সাধারণে ভোটার ও যুবকদের আকৃষ্ট করতে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' বিনির্মাণকে সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ৬ লাখ কর্মীকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন প্রচারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আগামী ২৬ অক্টোবর অনলাইনের মাধ্যমে সারাদেশে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করবে দলটির কেন্দ্র।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসাবে ৩০০ আসনে এমপি পদে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম প্রায় শেষ দিকে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীদেরকে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারের মাধ্যমে নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়া এবং বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবেলায় মাঠে সক্রিয় থাকার সবুজ সংকেত দিয়েছে দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব। খবর বিভিনিউজ২৪'র।
একইসাথে দীর্ঘদিন একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে বিভিন্ন মহানগরী, জেলা, উপজেলাসহ যেসব ইউনিটে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল রয়েছে, সেগুলো নিরসনে কাজ করছেন কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নিয়োজিত নেতারা।
কেন্দ্রের নেতারা জানিয়েছেন, ভোটের প্রস্তুতির পাশাপাশি নির্বাচন বানচালে এখন বিএনপি-জামায়াত কঠোর কর্মসূচির দিকে যাচ্ছে। বিরোধীদের এসব আন্দোলন মোকাবেলা করে মাঠ দখলে রাখার জন্য দলের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী, মহানগর, জেলা, উপজেলা ও ইউনিট পর্যায়ের নেতাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নেতারা বলেছেন, নির্বাচনী ইশতেহারকে অংশগ্রহণমূলক ও আকর্ষণীয় করতে এবার প্রথমবারের মতো তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামত নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরপরই ৩০০ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবে দলটি। এরপর জাতির উদ্দেশ্যে ইশতেহার প্রকাশ করবে আওযামী লীগ।
আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত প্রস্তুতির বিষয়ে দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, ’আমাদের দল নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত। নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসাবে দলের যেসব কাজ রয়েছে, সেগুলোও প্রায় শেষের দিকে; যেমন নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন, সরকারের পরিকল্পনা ইত্যাদি।’
এদিকে দলীয়ে একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রী ও এমপিদের মধ্যে প্রায় ৯০ জনের বিষয়ে নানান অভিযোগ থাকায় তারা এবার মনোনয়ন পাবেন না। ওই সব আসনে নতুন মুখ আসতে পারে।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, আগামী মাসের মাঝামাঝি নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে। আর জানুয়ারির শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কী কী উন্নয়ন করেছেন, সেগুলো সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের অপশাসন এবং সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের চিত্রগুলোও তুলে ধরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দলের ভিতরে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড নেতা-কর্মীদের তালিকা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যাতে করে তারা ভোটে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে না পারে।
এদিক আগামী ২৮ অক্টোবর বিএনপিও তার সমমনা দলগুলো সরকার পতনের আল্টিমেটাম দিয়ে বড় কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অক্টোবর মাসে বিএনপির সঙ্গে তাদের কোয়ার্টার ফাইনাল, নভেম্বর সেমি-ফাইনাল আর জানুয়ারিতে ফাইনাল খেলা হবে।
এই খেলায় জয়লাভ করে জানুযারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে সরকার গঠন করবে এবং শেখ হাসিনাই হবে বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: