বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী এবং বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন হল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালে সৃষ্টির পর থেকেই দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছাত্রলীগের রয়েছে অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। দেশের ক্রান্তিলগ্নে এ সংগঠনের বহু নেতা-কর্মী প্রাণ দিয়েছে। দেশ মাতৃকা ও দেশের জনগণের অধিকার আদায়ে ছাত্রলীগের যা যা অর্জন তার সমকক্ষ আজ অবধি কোন ছাত্রসংগঠন হতে পারেনি।
প্রতিষ্ঠার ৭৫ বছরে এসেও ছাত্রলীগ তার ঐতিহ্য ধরে রেখে কাজ করে যাচ্ছে ছাত্র সমাজ তথা সাধারণ মানুষের জন্য। ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শেখ স্বাধীন মোহাম্মদ শাহেদের নেতৃত্বে সমাজসেবা সেল একের পর এক শিক্ষার্থী বান্ধব কাজ করে যাচ্ছে গত কয়েক বছর যাবৎ।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য মাসব্যাপী ইফতার বিতরণ কর্মসূচি পরিচালনা করছে ছাত্রলীগের সমাজসেবা সম্পাদক শেখ স্বাধীন মোহাম্মদ শাহেদ ও ধর্ম সম্পাদক তুহিন রেজা। প্রতিদিন প্রায় ৬০০ সাধারণ শিক্ষার্থী এসে ইফতার করে যাচ্ছে মধুর ক্যান্টিন থেকে। প্রায় শ'খানেক হতদরিদ্র ও ভিক্ষুকও ইফতার করতে পারছে এখানে।
এ ব্যাপারে শেখ স্বাধীন মোহাম্মদ শাহেদ জানান, "আমরা গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও ইফতার বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। বিগত বছরের মত এবারও একেবারে শেষ রমজান পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলমান থাকবে এবং ইদের দিন সেমাই, মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হবে।"
এ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ নির্দেশনা, সহযোগিতা ও তদারকি এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের আন্তরিকতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের এ ধরণের মানবিক ও শিক্ষার্থী বান্ধব কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন শাহেদ।
এর আগে গত দুই বছর করোনা মহামারীতে সারাদেশে লকডাউন চলাকালীন সময়েও ঢাকা শহরসহ সারা দেশের ছাত্রসমাজের পাশে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাজসেবা সেল। তখন ঢাকায় অবস্থানরত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্য চাল, ডাল, তেল, লবণ, পেঁয়াজ সহ সকল প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর ব্যবস্থা করেছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সবাই মোবাইল ফোনে নাম এন্ট্রি করে মধুর ক্যান্টিন থেকে নিতে পারত খাদ্যসামগ্রী। ঢাকার ভেতরের প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের এ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।
এছাড়াও বিগত দুই বছর শীতকালে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কম্বলের ব্যবস্থা করেছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাজসেবা সেল। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী লজ্জায় নিজের দৈন্যতার কথা বলতে না পারায় শীতে কষ্ট করছিল। তাদের জন্য নাম-পরিচয় গোপন রাখা সাপেক্ষে শীতের কাপড় আর কম্বল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তাদের হাতে। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা পেয়েছে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।
করোনাকালীন সময়ে ঢাকাতে মেসে থাকা প্রচুর সংখ্যক ছাত্রছাত্রী আর্থিক সংকটে খুব মানবেতর জীবনযাপন করেছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাজসেবা সেল বকেয়া ভাড়া পরিশোধ করে দেওয়া কিংবা মালিকের অন্যায় আচরণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে ছিল। বিভিন্ন সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে আইনী সহায়তাও দিয়েছে ছাত্রলীগ।
বিভিন্ন শিক্ষার্থী বান্ধব কর্মকান্ডের জন্য সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে ছাত্রলীগের সমাজসেবা সেলের প্রতি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীরাও সব সময় সমাজসেবা সেলকে সার্বিক সহায়তা করেছে। তারা এ ধরণের কাজকে সাধুবাদ জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও ছাত্রলীগের এ ধরণের কর্মসূচি গ্রহণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
ছাত্রলীগের এ ধরণের কর্মসূচির বিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, "মানবিক কাজকর্মে বর্তমান ছাত্রলীগ অনন্য নজির স্থাপন করেছে। করোনাকালীন সময়ে কৃষকের ধান কাটা, মাড়াই করা থেকে শুরু করে ঘরে তুলে দেওয়া পর্যন্ত পাশে ছিল ছাত্রলীগ। শুধু তাই নয়, যে সময় করোনায় মারা যাওয়া বাবা মায়ের লাশ ফেলে সন্তানরা পালিয়ে চলে যেত সেই মুহুর্তেও লাশ দাফনের কাজ করেছে ছাত্রলীগ। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণে ছাত্রলীগের ভূমিকা দেশের সাধারণ মানুষ মনে রাখবে। এভাবেই ছাত্রলীগ সাধারণ জনগণের মণিকোঠায় স্থান পেয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে।"
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: