আত্মহত্যার আগে তরুণীকে যা বলেছিলেন বসুন্ধরার এমডি (ভিডিও)

সময় ট্রিবিউন | ২৮ এপ্রিল ২০২১, ০০:২৩

মোসারাত জাহান মুনির সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর: ছবি সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে সোমবার এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোসারাত জাহান (মুনিয়া) নামের ওই তরুণী রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ওই তরুণীর সাথে আনভিরের একটা ফোনালাপ ভাইরাল হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৯ টার দিকে ১ মিনিটের একটি ফোনালাপ ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

মুনিয়া যে কারনে আত্মহত্যা করলেন দেখুন এই ভিডিওতে

ধারণা করা হচ্ছে, এটি রোববার (২৫ এপ্রিল) কোনো এক সময়ের ফোনালাপ। এই ফোনের পর মানসিক চাপ সইতে না পেরে সে রাতে কুমিল্লায় বসবাসরত বড় বোনকে ঝামেলায় পড়ার কথা বলে ঢাকায় আসতে বলেন। সোমবার বড়বোন কুমিল্লা থেকে রওয়ানা দিয়ে পৌঁছার আগেই তিনি ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দরজা ভেঙে মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ দেখেন বোন।।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফোনালাপের শুরুতে মুনিয়াকে বলতে শোনা যায় আপনার লজ্জা নেই! আল্লাহকে ভয় করেন না আপনি! আপনাকে কে বলছে আমি ৫০ টাকা লাখ নিছি? বলেন… কে বলছে আপনাকে। বলেন….আপনি বলেন?

এরপর আনভির বলছেন- আমার টাকাটা দিয়ে দেয়। শুন…. আমার টাকাটা দিয়ে দেয়।

মুনিয়া : আপনি কেন আমাকে এভাবে ব্লেম দিচ্ছেন? কে বলছে আপনাকে, আমি টাকা নিছি? আমি তো সব সত্য বলছি।

আনভির : চুর…..চুর…চুর….!

মুনিয়া : আমি আপনার টাকা নিই নাই।

আনভির : চুর…চুর….চুর..চুর…চুপ। আমার টাকা ফেরত দে। তোরে দুদিন সময় দিলাম। দুদিনের মধ্যে টাকা রেডি কর। নইলে পুলিশ নিয়ে আসব।

মুনিয়া : আমি কোনও টাকা নিই নাই। আপনি মিথ্যা বলছেন। আপনি আর কোন অপশন পান না? আমি তো আপনাকে বিশ্বাস করছি। এখন আমার পেছনে লাগছেন। না?

এক পর্যায়ে মুনিয়া বলেন-কালকে আল্লাহ আপনার বিচার করছে। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন আনভির। বলেন- মাগির বাচ্চা…মাগি। কী বলিস? তোর চৌদ্দগুষ্টি…

মুনিয়া : ঠিক আছে। আপনি পুলিশ নিয়ে আসুন। আমি কোনও টাকা নিই নাই (কান্নাজড়িত কণ্ঠে)।

আত্মহত্যার আগে তরুণীকে বসুন্ধরা এমডি’র হুমকির ফোনালাপ

এদিকে, কুমিল্লার স্থায়ী বাসিন্দা ওই তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের পর তার বোন সোমবার গভীর রাতে এই মামলা করেন বলে জানান গুলশান জোনের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

মামলার বরাত দিয়ে উপকমিশনার বলেন, মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। আনভীর এক বছর মেয়েটিকে বনানীর ফ্ল্যাটে রাখেন। পরে আনভীরের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি কুমিল্লায় চলে যান। তবে মার্চ মাসে ঢাকায় এসে গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন।

তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। ওই পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে আনভীরের মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যেকোনো মুহূর্তে তার যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে।

এই ফোনের পর কুমিল্লা থেকে সোমবার বিকেলে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। তবে গুলশানের ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

এদিকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে আবেদন করলে আদালত সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: