সেনাবাহিনী দেশ গড়ার কাজে আরও বেশি অবদান রাখবে

সময় ট্রিবিউন | ৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:১৩

ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি গত ৫০ বছরে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। 

 শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘ আমরা ইতোমধ্যেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছি। দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে ত্রাণ ও পুনবার্সন কর্মকাণ্ড কিংবা উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‌‘সাম্প্রতিক সময়ে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ আজ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সংখ্যক শান্তিরক্ষী প্রেরণ করার গৌরব অর্জন করেছে, যাতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। বিশ্বশান্তি রক্ষায় সেনাবাহিনীর ১২৫ জন সদস্য প্রাণ দিয়েছেন। আমি তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আমি এ বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আজকের এ বিশেষ ক্ষণে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও মহান আত্মত্যাগে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। আমি শ্রদ্ধা জানাই জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং দুই লাখ নির্যাতিতা মা-বোনকে। স্মরণ করি দেশমাতৃকার সেবায় আত্মোৎসর্গকৃত সেনাবাহিনীর সব শহীদদের।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ বাঙালি সেনাসদস্যরা সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর ১ হাজার ৫৩৩ জন বীর সেনা শাহাদত বরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার অবদান স্বরূপ সেনাবাহিনীর তিনজন বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, সিপাহী হামিদুর রহমান ও সিপাহী মোস্তফা কামাল এবং অন্যান্য খেতাবপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ২৮৮ সদস্য সেনাবাহিনীর ইতিহাসকে গৌরবান্বিত করেছেন। আমি তাদের সবার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের পাশাপাশি একটি সুশৃঙ্খল, পেশাদার এবং শক্তিশালী সামরিকবাহিনী গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালে কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন এবং কম্বাইন্ড আর্মস স্কুলসহ সেনাবাহিনীর প্রতিটি কোরের জন্য স্বতন্ত্র ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৭৪ সালেই একটি প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভের পর আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতিমালার আলোকে ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছি এবং তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আজকে যে আধুনিক সেনাবাহিনী তা আমাদের গৃহীত সব পদক্ষেপেরই বাস্তব প্রতিফলন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা সততা, নিষ্ঠা, দেশপ্রেম ও পেশাগত দক্ষতায় বলীয়ান হয়ে দেশের প্রতিরক্ষা ও দেশ গড়ার কাজে আরও বেশি অবদান রাখবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি আপনাদের সবাইকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই। আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুবর্ণজয়ন্তীতে এ বাহিনীর সব সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করছি।’

 

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: