ভুটান বাংলাদেশের ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য সেদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।
বুধবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে কথা বলেন। বিকাল ৪টার দিকে লোটে শেরিং বঙ্গভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতি তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
সাক্ষাতের পর রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন গণোমাধ্যমকে জানান, “রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বাণিজ্য-বিনিয়োগ, যোগাযোগ, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ, পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। এছাড়া দুই দেশ বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক বাড়াতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, কৃষি, হর্টিকালচার এবং মৎস্য খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে’।”
এছাড়াও ভুটান বাংলাদেশের ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য সেদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ‘অত্যন্ত চমৎকার’। সময়ের পরিক্রমায় এ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাচ্ছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যেও জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষ ও সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান আবদুল হামিদ।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ভুটান এক হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করায় বিশেষ ধন্যবাদ দেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর বাংলাদেশের সাথে ভুটানের বাণিজ্য বিনিয়োগসহ বিভিন্ন খাতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও সম্প্রসারিত হবে।
প্রেস সচিব বলেন, “সাক্ষাতের সময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বলেন, ভুটান বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক সবসময় উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক, বিশেষ করে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের অগ্রগতির প্রশংসা করেন।”
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ভুটান যে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করেছে, তা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের হাতে তুলে দেন লোটে শেরিং।
বাংলাদেশের উদযাপনে সঙ্গী হতে মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় পৌঁছান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাকে ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
বিমানবন্দর থেকে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সরাসরি সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে সেখানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর বিকালে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: