স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ইভ্যালিসহ আরও কয়েকটি ই-কমার্স মানুষের থেকে অনেক টাকা নিয়েছে। কীভাবে তারা তাদের কমিটমেন্ট পূর্ণ করবে সেটা আমার এখন জানা নেই। কমিটমেন্ট পূরণ না করলে তাহলে আইন অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন রিমান্ডে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। গতকাল শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রিমান্ডে তাদেরকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল দাবি করেছেন, তিনি কোনও টাকা আত্মসাৎ করেননি, জেনেবুঝেই গ্রাহকরা ইভ্যালিতে পণ্য অর্ডার করেছে। যারা ডেলিভারি পায়নি ভবিষ্যতে টাকা পেয়ে যাবে।
রিমান্ডে তিনি আরও দাবি করেছেন, অনেক সময় স্টক শেষ হওয়ায় পণ্য ডেলিভারি দিতে পারেননি। যাদের পণ্য ডেলিভারি দিতে পারেননি তাদের টাকা রিফান্ড করেছেন। অনেকের রিফান্ড প্রক্রিয়াধীন।
জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল আরও একটি কারণ জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি একটি নির্দেশনা দিয়েছে, কোনও গ্রাহক পণ্য অর্ডার করলে তাকে ওই পণ্যের ১০ শতাংশ টাকা পরিশোধ করতে হয়। বাকি ৯০ শতাংশ টাকা পণ্য পাওয়ার পর গ্রাহক প্রদান করবেন। পরে অনেক অর্ডার সাপ্লাইয়ারকে দিলেও এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সাপ্লাইয়ার ইভ্যালিকে ফুল পেমেন্ট ছাড়া পণ্য দিতে চায়নি। ফলে ডেলিভারিগুলো আটকে গেছে। এছাড়াও করোনার জন্য অনেক পণ্যের ‘উৎপাদন বন্ধ ছিল’ তাই সাপ্লাইয়াররা ইভ্যালিকে পণ্য দেয়নি। ফলে গ্রাহকদেরকে সব পণ্য ডেলিভারি দেওয়া যায়নি।
এর আগে শুক্রবার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের অংশ হিসেবে ইভ্যালির রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে প্রশ্ন করলে হঠাৎ করেই রাসেল মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং বুকে ব্যথা অনুভব করছেন। তখন হাসপাতালে পাঠালে বেশ খানিকটা সময় অপচয় হয়। শনিবার সকাল থেকে রাসেল ও তার স্ত্রীকে বিভিন্ন বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। তারা দুজনই স্বাভাবিকভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। রিমান্ডে পাওয়া সব তথ্য আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলে জানান এসআই ওয়াহিদুল।
তার আগে ইভ্যালির ‘সম্পদের চেয়ে ছয় গুণ বেশি দেনা’ বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনে ইভ্যালির মোট দায় ৪০৭ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছে ২১৪ কোটি টাকা, আর মার্চেন্টদের কাছ থেকে বাকিতে পণ্য নিয়েছে ১৯০ কোটি টাকার। স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৪ কোটি টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু সম্পদ আছে মাত্র ৬৫ কোটি টাকার।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: