কোভিড-১৯ আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা কিছুটা ভালো। তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন, অক্সিজেন লাগছে না। শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজায় সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কেমন উন্নতি হচ্ছে জানতে চাইলে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, গত তিনদিন থেকে ম্যাডামের একটু জ্বর আছে। জ্বরের মাত্রাটা গতকাল (১৬ এপ্রিল) সারাদিন এবং রাত পর্যন্ত ১০০ এর কিছুটা বেশি ছিলো। কিন্তু আজ সারাদিন জ্বর ছিল না। সন্ধ্যা থেকে আবারও জ্বর এসেছে, যেটা ১০০.৪-এর মতো। নতুন যে এন্টিবায়োটিক ওষুধটি শুরু করেছি, সেটির আজ তৃতীয়দিন। ওষুধের রেসপন্স ভালো বলে মনে হচ্ছে। আমরা তার পালস, ব্লাড পেশার এগুলো চেক করেছি। সবকিছু ভালো আছে।
তিনি আরও বলেন, শুধু একটা প্যারামিটারের উন্নতি দিয়ে কিন্তু সার্বিক উন্নতিকে মূল্যায়ন করা যাবে না। জ্বর কমে গেছে, তিনি ভালো হয়ে যাচ্ছেন। প্রফেশনালি আমাদের যে মেডিকেল বিষয় আছে, সেটি দিয়ে আমরা তার চিকিৎসা করে যাচ্ছি।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, মনে রাখতে হবে যে আজ তার (খালেদা জিয়া) করোনা আক্রান্তের নবম দিন। অর্থাৎ আমরা দ্বিতীয় সপ্তাহের জটিল সময়টি পার করছি। কোনো জটিলতা বা বিপদ সংকেত পেলে আমরা তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেব। কিন্তু এখন পর্যন্ত আলহামদুলিল্লাহ সবকিছু ঠিকঠাক। আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি এই পুরো সপ্তাহ না যাওয়া পর্যন্ত যেকোনো সময় ম্যাডামের জটিলতা দেখা দিতে পারে। সেজন্য তাকে ক্লোজ মনিটর করে যাচ্ছি।
তাহলে কি খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই জানতে চাইলে সিদ্দিকী বলেন, আমরা যদি মনে করি তাকে নেওয়া দরকার, তাহলে খুব দ্রুতই শিফট করতে পারব। তবে, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো অবস্থা দেখা যায়নি। সবকিছুই মিলিয়েই ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলা যায়।
সিটি স্ক্যান রিপোর্টের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডা. সিদ্দিকী বলেন, রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। সেখানে নূন্যতম সংক্রমণ এসেছে। এটা খুবই কম। অনেকের হুট করেই ৫০-৬০ শতাংশ সংক্রমণ হয়ে যায়। কিন্তু ম্যাডামের ক্ষেত্রে সেটা নেই।
ডা. সিদ্দিকী বলেন, গত বছর মার্চে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তার ক্ষুধা মন্দা ছিল, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ছিল। তার ব্লাড সুগার ১১-এর ওপরে ছিল। সেটিকে এখন আমরা ৮-এর কাছে নিয়ে এসেছি। সেই কারণে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরও তাকে মোটামুটি একটা ভালো অবস্থানে দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আপাতত খালেদা জিয়াকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে। তবে প্রয়োজন হলে তাকে হাসপাতাল নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে অক্সিজেন দেওয়া লাগেনি উল্লেখ করে ডা. সিদ্দিকী বলেন, মানসিকভাবে তিনি খুবই শক্তিশালী আছেন। তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিচ্ছেন, অক্সিজেন লাগছে না।
গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজার আরও আটজন ব্যক্তিগত স্টাফের করোনা শনাক্ত আক্রান্ত হয়। তাদের চিকিৎসাও গুলশানের বাসভবনে চলছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: