‘কার্গো জাহাজের বেপরোয়া গতি, চালকের উদাসীনতায় লঞ্চডুবি’

সময় ট্রিবিউন | ১৬ এপ্রিল ২০২১, ০৪:৫৮

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবির পর উদ্ধারের চিত্র-ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী লঞ্চ ডুবিতে ৩৪ জন নিহতের ঘটনায় গঠিত দুই তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।

জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বলেন, লঞ্চ ডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি আজ বিকেলে ২৬ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এতে ২১টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা পুনরায় না ঘটে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- কার্গো জাহাজটির বেপরোয়া গতি, সিগনাল না মানা, চালকের উদাসীনতা, সরু নদী পথসহ তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের স্থাপনার ত্রুটি।

জাহাজের মালিকানা এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন পুরোপুরি দেখা হয়নি। তাই বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। তবে কার্গোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অবশ্যই তার বিরুদ্ধে শাস্তি হবে। এর মালিক যিনি হবেন তিনি তো কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না।

এ দিকে, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি গত ১২ এপ্রিল তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বলেন, এমভি-এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজটির বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার প্রধান কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। চালকের বেপরোয়া গতি, অদক্ষতা ও অবহেলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা রোধে ২৩টি সুপারিশ করা হয়েছে।

গত ৪ এপ্রিল বিকেল ৬টায় নারায়ণগঞ্জের লঞ্চ টার্মিনাল থেকে অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী ‘এমভি সাবিত আল হাসান’ নামে লঞ্চটি মুন্সিগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ২০ মিনিট যাওয়ার পর সদর উপজেলার সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে পিছন থেকে এসে ‘এমভি-এসকেএল-৩’ নামে একটি কার্গো জাহাজ ধাক্কা দিয়ে লঞ্চটিকে ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ৩৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বন্দর থানায় মামলা করেন।

ঘটনার রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন সাত সদস্য ও বিআইডব্লিউটিএ পাঁচ সদস্যের দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ৫ এপ্রিল নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে আরও একটি সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

পরে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া এলাকার মেঘনা নদী থেকে এমভি-এসকেএল-৩ কার্গো জাহাজ ও জাহাজের মাস্টার, সুকানীসহ ১৪ জনকে আটক করে নৌ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে কোস্টগার্ড।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: