তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের চলে যাওয়ার এক দশক

সময় ট্রিবিউন | ১৩ আগষ্ট ২০২১, ২০:২৪

তারেক মাসুদ ও মিশুক মনির-ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ও এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আশফাক মিশুক মুনীরের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১১ সালের এই দিনে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা নিহত হন। তাদের সঙ্গে আরও তিনজন নিহত হন। ওই তিনজন হলেন চালক মুস্তাফিজ, তারেক মাসুদের প্রোডাকশন ম্যানেজার ওয়াসিম ও কর্মী জামাল।

২০১১ সালের আজকের দিনে (১৩ আগস্ট) ‘কাগজের ফুল’ সিনেমার শুটিং স্পট দেখে মানিকগঞ্জের শালজানা থেকে ঢাকা ফিরছিলেন নির্মাতা তারেক মাসুদ। সঙ্গী ছিলেন স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, মিশুক মুনীর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিল্পী ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম জলি। এছাড়া ছিলেন প্রডাকশন সহকারী ওয়াসিম, জামাল। আর তাদের গাড়িটি চালাচ্ছিলেন চালক মুস্তাফিজুর রহমান।

ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোকা এলাকায় যখন তাদের গাড়িটি পৌঁছায় তখন ঝুম বৃষ্টি হচ্ছিলো। হয়তো সেটা ছিল বিদায়ের আগের কান্না। এসময় চুয়াডাঙ্গাগামী ডিলাক্স পরিবহনের একটি দ্রুতগতির বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীর, প্রডাকশন সহকারী ওয়াসিম, জামাল ও চালক মুস্তাফিজুর রহমান নিহত হন।

আহত হন তারেকের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ, ঢালী আল মামুন ও তার স্ত্রী দেলোয়ারা বেগম জলি।

এ ঘটনার পর পেরিয়ে গেছে ১০ বছর। দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই স্থানীয় উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিফলক। ২০১১ সালের পর থেকে প্রতিবছর ওই স্মৃতিফলকে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মীসহ বিশিষ্টজনরা নিহতদের স্মরণ করছেন।

দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়ে যেতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন ‘মাটির ময়না’র পরিচালক তারেক মাসুদ। ১৯৮৯ সালে চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানকে নিয়ে ‘আদম সুরত’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন তারেক মাসুদ। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১৯৯৫ সালে তার নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মুক্তির গান’ ও ‘মুক্তির কথা’ (১৯৯৬) প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। এরপর ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাটির ময়না’ দেশের চলচ্চিত্রকে নিয়ে যায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

ক্যামেরা ‘ডিরেক্টর’ হিসেবে কাজ করে যেসব বাংলাদেশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন, তাদের মধ্যে আশফাক মিশুক মুনীর ছিলেন অন্যতম। শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর ছেলে আশফাক দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বিবিসির ভিডিও গ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। সবার কাছে মিশুক মুনীর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন তিনি। তারেক মাসুদের সিনেমা ‘রানওয়ে’র প্রধান চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেন তিনি। নিজ নিজ ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তাদের দু’জনকে একুশে পদকে (মরণোত্তর) ভূষিত করে সরকার।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর