নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (উন্নয়ন) নূর হোসেন জানান, শুক্রবার বেলা সোয়া দুইটা পর্যন্ত ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এই অগ্নিকাণ্ডে গতকাল তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রূপগঞ্জের ভুলতায় জুস কারখানার ছয়তলা ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে ভবনটি থেকে লাফিয়ে পড়েন শ্রমিক স্বপ্না রানী (৪৪) ও মিনা আক্তার (৩৪)। ঘটনাস্থলেই তাঁরা দুজন মারা যান। এরপর মোরসালিন (২৮) নামের একজন শ্রমিক প্রাণ বাঁচাতে ওই ভবনের তৃতীয় তলা থেকে লাফ দেন। মোরসালিনকে রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভবনে আটকাপড়ে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিকদের উদ্ধারে দেরি হওয়ায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। শুক্রবার বেলা ১১টার থেকে থেকে সাড়ে ১১টায় পর্যন্ত প্রায় আধা ঘণ্টা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের ওপর এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপসহ ধাওয়া-পাল্টার ঘটনা ঘটে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে তিনটি সর্ট গান লুট করে। পরে দুইটি উদ্ধার হলেও একটি এখনও উদ্ধার হয়নি।
অগ্নিকাণ্ডে ছয় তলা ভবনটির কয়েকটি ফ্লোরে অন্তত ৪৫ জন শ্রমিক আটকা পড়ে নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্বজনরা দাবি করছেন।
রূপগঞ্জের সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম বেপারীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাকী সদস্যরা হলেন- রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ নুসরাত জাহান, জেলার ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল আরেফিন, পুলিশের একজন প্রতিনিধি এবং কলকারখানা অধিদপ্তরের জেলার একজন কর্মকর্তা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: