রাত পোহালেই শেরপুরের গারো পাহাড়ে গৃহহীনদের স্বপ্নপূরণ

শেরপুর প্রতিনিধি | ২০ জুন ২০২১, ০৮:৩৯

ছবিঃ সংগৃহীত

আগামীকাল ২০ জুন (রবিবার) গারো পাহাড়ের হলদিগ্রামের ১৬৭ টি পরিবারের মুখে হাসি ফুটতে যাচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় উপহার হিসাবে তারা পাচ্ছেন দুই শতক জমির উপর সেমিপাকা বাড়ি। আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ঘর হস্তান্তর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল হলদিগ্রামে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন কার্যক্রমটির। ইতোমধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানান প্রস্তুতি। একইসাথে পাহাড়ে বইছে উৎসবের আমেজ।

এ ব্যাপারে আব্দুল হকের স্ত্রী সালেহা বেগম জানান, "আমাগো জাগা-জমি কিছুই নাই। ঢলে ঢলে ঘুরতাম। কেউ থাকবার এল্লাহানি জাগা দেয়নাই। প্রধানমন্ত্রী আমাগো জাগা দিতাছে, ঘর দিলো আমরা খুব খুশি অইছি।"

মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ভূমি ও গৃহহীনদের দ্বিতীয় পর্যায়ে ৬৪ জেলার ৪৫৯ উপজেলার ৫২ হাজার ৯শ ৪৫ পরিবারকে ২শতাংশ জমি ও একটি করে সেমি পাকা ঘর তুলে দেয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার ১৬৭ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছেন ঘর ও জমি। আগামী ২০ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৪টি জেলায় সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে ঘর বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। এর মধ্যে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের হলদিগ্রামে যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী। আর প্রধানমন্ত্রীর হাতে ঘরে বুঝে পাওয়ার সংবাদে জমি ও ঘর পাওয়া এসব পরিবার অনেক খুশি।

সুন্দরভাবে এ উদ্বোধনী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে চলছে নানা তৎপড়তা। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ডেকে প্রশাসনের প্রস্তুতি সম্পর্কেও জানানো হয়েছে। জেলার সদর উপজেলাসহ পাঁচ উপজেলার প্রতিবন্ধী, ভিক্ষুক, হাতি আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার, রিকশাচালক, দিনমজুর, বিধবা, কাজের মহিলাসহ ১৬৭টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারের জন্য প্রতিটি বাড়ি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। এতে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা। পাকা ঘর বুঝে পাওয়ার খবরে আনন্দে ভাসছে এসব পরিবার।

এ ব্যাপারে আব্দুল হকের স্ত্রী সালেহা বেগম জানান, "আমাগো জাগা-জমি কিছুই নাই। ঢলে ঢলে ঘুরতাম। কেউ থাকবার এল্লাহানি জাগা দেয়নাই। প্রধানমন্ত্রী আমাগো জাগা দিতাছে, ঘর দিলো আমরা খুব খুশি অইছি।"

ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী জমিলা বেগম জানান, আমাগো তো কছিুই আছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাগো নিজ হাতে ঘর ও জমি তুলে দিতাছে, আমরা খুশি অইছি। আমরা দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী মেলা দিন বাইছা থাহুক।

নিশা রানী হাজং জানান, পাহাড়ের ঢালুতে এডা ঝুপড়া ঘর তুইলা থাকতাম। হাতি আইসা ঘর ভাইঙ্গা দিছে। মেলা জায়গায় ঘুরছি। কেউ থাহার জাগা দেয়নাই। প্রধানমন্ত্রী ঘরও দিতাছে, জাগাও দিবো। তাউ তিনি আমাগো এ হলদি গেরামের মানুষের ভিডিওর মাধ্যমে নিজের হাতে দিবো। আমরা খুব খুশিতে আছি।

জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের একজন মানুষকেউ গৃহহীন রাখবেননা। এজন্য তিনি ভূমিহীন অসহায় মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জেলার গারো পাহাড়ের হলদি গ্রামে ভিডিও কনফারেন্সে সরাসরি যুক্ত হয়ে ঘর উপহার দিবেন। এতে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ এবং আনন্দিত।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: