কুষ্টিয়া শহরে প্রকাশ্যে নিজের স্ত্রী, সৎ ছেলেসহ তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার বেলা ১১টার দিকে শহরের কাস্টমস মোড়ে একটি ভবনের নিচ তলার মার্কেটের মধ্যে গুলির ওই ঘটনা ঘটে।
পরে সৌমেন কুমার নামে পুলিশের ওই এএসআইকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহতরা হলেন- কুমারখালী উপজেলার সাওতা গ্রামের মেজবার খানের ছেলে বিকাশ কর্মী শাকিল খান (২৮), নাথুরিয়া বাশগ্রামর আমির আলীর মেয়ে আসমা খাতুন (৩৪) এবং আসমার ছেলে রবিন (৭)।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, এএসআই সৌমেন কুমার মাগুড়ার বাসিন্দা, বর্তমানে খুলনা ফুলতলা থানায় কর্মরত। জিজ্ঞাসাবাদে সৌমেন নিহত আসমাকে তার স্ত্রী বলে দাবি করেছে। রবিন আসমার আগের ঘরের ছেলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সৌমেনের স্ত্রী আসমার সাথে বিকাশকর্মী শাকিলের কোনো সম্পর্ক বা আর্থিক লেনদেনের ঝামেলা থাকতে পারে। আমরা সবগুলি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ওই চারতলা ভবনের নিচতলার মার্কেটে গুলির শব্দ শুনে লোকজন জড়ো হয়। তারা মার্কেটের মেঝেতে এক নারী ও পুরুষ এবং মার্কেটের সামনে এক শিশুর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় লোকজনের ভিড় দেখে অস্ত্রধারী এক যুবক হাতের রিভলবার উঁচু করে গুলি করার ভয় দেখান। এলাকাবাসী তখন ক্ষেপে গিয়ে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। ওই পরিস্থিতিতে যুবকটি হাতের অস্ত্র ফেলে দেন। পরে লোকজন তাকে মার্কেটের ভেতর আটকে রেখে পুলিশে খবর দেয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, গুলিবিদ্ধ তিনজনকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে তিনজনকে হত্যার ঘটনায় আটক এএসআই সৌমেন রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া খুলনা রেঞ্জ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুলনা রেঞ্জের দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ কুষ্টিয়ায় এক পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত কমিটির সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সূত্র জানায়, সৌমেন রায় ২০১৫ সালে কনস্টেবল থেকে এএসআই পদে উন্নীত হন। পরে ২০১৬ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় যোগ দেন। সেখান থেকে জেলার অন্যান্য থানায়ও কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ মিরপুর থানার হালসা ক্যাম্পে ছিলেন। এরপর বাগেরহাট হয়ে খুলনা ফুলতলা থানায় যোগ দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: