শেরপুরের নকলা উপজেলায় ৪০ দিন ব্যাপী মসজিদে জামাতের সহিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী ৯ জন শিশুকে পুরস্কার হিসেবে একটি করে বাই-সাইকেল প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (১২মে) সকালে উপজেলার ৩নং উরফা ইউনিয়নের উরফা গ্রামে অবস্থিত “উরফা পূর্বপাড়া সাহের উদ্দিন মেম্বার বাড়ী সংলগ্ন জামে মসজিদ” প্রাঙ্গনে বিজয়ী ৭ জন শিশুর প্রত্যেককে একটি করে বাই সাইকেল এবং ২ জনকে সাইকেল সমমূল্য অর্থ তুলে দেন মসজিদ কমিটির সদস্যরা।
জানা যায়, শিশুরা যাতে মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং একত্ববাদ ও সমাজে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারে এমন লক্ষকে সামনে রেখে উরফা গ্রামের আব্দুল লতিফ ওরফে লতি মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী পারভেজ হাসান এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। প্রতিযোগিতায় শর্ত ছিলো ৮-১২ বছর বয়সী শিশুদের স্থানীয় একটি মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে ৪০ দিন নামাজ আদায় করতে হবে। পুরস্কার হিসেবে তাদের প্রত্যেককে একটি করে বাই সাইকেল প্রদান করা হবে। প্রতিযোগিতায় সাড়া দিয়ে প্রথম দিকে প্রায় ৪০-৪৫ জন শিশু নামাজ আদায় শুরু করলেও চূড়ান্ত পর্যন্ত ৯জন টিকে থেকে বিজয়ী হয়েছে। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের উপস্থিতিতে আজ সকালে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনের উদ্যোক্তা সৌদি আরব প্রবাসী পারভেজ হাসান জানান, বর্তমান আধুনিক যুগে অধিকাংশ শিশুরাই মোবাইল, টিভি এবং ল্যাপটপের স্ক্রীনে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে। শিশুদের মোবাইল আশক্তি ভয়াবহ আকার ধারন করায় বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুদের মধ্যেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। শিশুরা যাতে নিয়মিত মসজিদে যেতে অভ্যস্থ হয়, নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারে, এ শিশুদের মধ্যে যাতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে আগ্রহ সৃষ্টি হয় এমন উদ্দেশ্যেকে সামনে রেখে আমাদের এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া।
এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু অংশগ্রহন করলেও ৯জন বিজয়ী হয়েছে। বিজয়ী ৭জন শিশুকে একটি করে বাই-সাইকেল এবং দুইজন শিশু সাইকেল না নেওয়ায় তাদেরকে সাইকেল সমমূল্য অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুরা টানা চল্লিশ দিন মসজিদে এসে নামাজ আদায় করেছে এতে তাদের মসজিদে আসতে জড়তা বা অলসতা কেটে গিয়েছে। জামায়াতে চল্লিশদিন টানা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ায় শিশুরা নামাজে অভ্যস্ত, নামাজের প্রতি আগ্রহ বা ভালবাসা সৃষ্টি হয়েছে। পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সাইকেল যানবাহনটি চালিয়ে শিশুদের শারীরিক ব্যায়ামের কাজ সম্পন্ন হবে এবং শিশুরা সময় কাটাতে পারবে এতে তাদের মাঝে মোবাইল, অনলাইন গেম আসক্তি কিছুটা হলেও কমবে এবং শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।
এ রকম প্রতিযোগিতা কর্মসূচি প্রত্যেকটা এলাকায় আয়োজন করা গেলে শিশুদের মাঝে মোবাইল আসক্তি কমবে, শিশুরা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও রীতি নীতি পালনে আগ্রহী হবে এবং শিশুরা মানবিক ও উদার মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠতে পারবে বলে ধারণা করছেন উক্ত প্রতিযোগিতার আয়োজক ও স্থানীয়রা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: