কক্সবাজারের টেকনাফ এবং উখিয়ার দালালদের সহায়তায় মিয়ানমার থেকে আবার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দালালরা একদিকে মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করছে; অন্যদিকে ক্যাম্পে যারা আছে তাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠাতে চাচ্ছে। এ অবস্থায় চিহ্নিত দালালদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিভিন্ন সূত্র মতে, কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী টেকনাফ এবং উখিয়ায় অন্তত দেড়শ চিহ্নিত দালাল রয়েছে, যারা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় পাঠানোর সঙ্গে সম্পৃক্ত। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢলের নেপথ্যেও এ দালালদের ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত দুমাসের বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের অন্তত সাতটি প্রদেশে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত দেশটির সেনাবাহিনী। এর মধ্যে আরাকান আর্মি নামে বিদ্রোহীদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি যে কোনো অপতৎপরতা ঠেকাতে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সদস্যরা যেমন হেঁটে ও বিশেষ যান এটিভির মাধ্যমে টহল দিচ্ছেন; অন্যদিকে নাফ নদী হয়ে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত বিশাল সমুদ্রসীমায় টহলে থাকছে কোস্টগার্ডের দ্রুতগতির নানা জলযান।
তবে ব্যাপক নজরদারির মধ্যেও নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কায় বাহিনীগুলো।
কোস্টগার্ড পূর্ব জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার আশফাক বিন ইদ্রিস বলেন, মিয়ানমারের নৌকাগুলো দেখতে অন্যরকম। ওই নৌকাগুলো যেন আমাদের সীমনায় ঢুকতে না পারে এ ব্যাপারে আমরা কঠোর নজরদারি রেখেছি।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর অব. এমদাদুল ইসলাম বলেন, তারা যেন এই সুযোগে রোহিঙ্গাদের আরেকটা স্রোত প্রবেশ করাতে না পারে, কিংবা কোনো ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে- এ জন্য দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, দালালরা যেন কোনোভাবেই এখানকার নাগরিকদের সমুদ্রপথে ঝুঁকির মধ্যে নিয়ে যেতে না পারে, সে জন্য কক্সবাজার জেলা পুলিশকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৪ অক্টোবর) সাগরপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় রোহিঙ্গাবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় ৪৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ সময় অবশ্য উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি মরদেহও। এ ঘটনায় চার দালালকে আটক করেছে পুলিশ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: