ঢাকার বুকে এক টুকরো ফুসফুস রমনা পার্ক বা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সবুজে ঘেরা এই উদ্যানে হাটতে যায় নগরবাসী। কাটায় অবসর সময় কিন্ত সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রকৃতির রূপ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে! রেস্টুরেন্ট বানানোর নামে কেটে উজাড় করা হচ্ছে অর্ধ-শতাব্দীর শতাধিক পুরনো গাছ।
গত কয়েকদিন ধরে গাছ কাটার এমন আয়োজন দেখে হতাশা আর ক্ষোভে উদ্বেলিত নগরবাসী। গাছ কাটারে প্রতিবাদে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধম্যে বইছে সমালোচনার ঝড়। এর আগেও কয়েকবার উদ্যানের গাছ কাটার উদ্যোগ নিয়েছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এমনকি গাছের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য স্বাধীনতা জাদুঘরও নির্মাণ করা হয়েছে উদ্যানের মাটির নিচে। তাই এ সামান্য রেস্টুরেন্ট বানাতে নির্দয়ভাবে গাছ কাটা মেনে নিতে পারেননি নগরবাসী।
রাষ্ট্রীয় গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেআইপি) এলাকায় খাবারের রেস্টুরেন্ট নির্মাণ ও সেটা নির্মাণের জন্য গাছ কাটা যে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করবে না এটা ভাবেনি তারা। জনসাধারণের প্রশ্ন, উদ্যানের গাছ কেটে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ কি খুব বেশি প্রয়োজন।
উদ্যানটিতে ঢুকলেই দেখা মেলে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকা কাটা গাছের গুঁড়ি আর কাটার জন্য চিহ্নিত করা গগণচুম্বী সব গাছ। গত ১০-১৫ দিনে গণপূর্ত অধিদফতরের আওতায় এখানকার প্রায় শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে বলে জানালেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তারা অভিযোগ করে বলছেন, রাতারাতি গাড়ি নিয়ে এসে বড় বড় গাছগুলো কেটে উদ্যান উজাড় করা হচ্ছে। গাছগুলো সেভ না করে রেস্টুরেন্টের জায়গা ম্যাপিং করা হয়েছে ফলে গাছগুলো কাটা পড়ছে বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
রেস্টুরেন্টের স্থাপনার পাশাপাশি ওয়াকওয়ে তৈরির জন্যও চলছে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। এটি করতেও কাটা পড়ছে শতাধিক গাছ। উদ্যানের বিভিন্ন স্পটে পড়ে থাকা বড় বড় গাছের গুড়ি জানান দেয়, কী অত্যাচারই না করা হয়েছে এদের উপর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণপূর্ত বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, উদ্যানে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষের খাবারের চাহিদা মেটাতে সাতটি রেস্টুরেন্ট নির্মাণের কাজ চলছে। এগুলো নির্মাণ করতে গিয়ে কিছুসংখ্যক গাছ কাটা পড়ছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
এদিকে প্রাণ ও প্রকৃতি রক্ষার দাবিতে শিল্প তৎপরতা চালিয়েছে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন বনোফুল। তারা বলেন, উদ্যান পাখিদের বসতি এভাবে গাছ কেটে নিলে শহরের পাখিরা আশ্রয় হারাবে। গাছ কাটা বন্ধ করুন।
আবহাওয়াবিদরা মনে করেন, গাছ কমে গেলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেবে। বৃষ্টি কম হবে আর এতে প্রানীকূল দুর্ভোগে পড়বে। তাই গাছ না কেটে গাছ রোপণ বৃদ্ধি করতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: