আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বাঙালির স্বপ্ন সাহসের স্মারক পদ্মা সেতু। পরদিন ২৬ জুন থেকে চলবে যানবাহন। তবে সেতুর উদ্বোধন ঘিরে নাশকতা বা ধ্বংসাত্মক কিছু ঘটিয়ে জণগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আর তাই পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে তিন স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে পুরো সেতু এলাকা। যে কোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত আছে পুলিশের সবকটি ইউনিট। পাশাপাশি নজরদারিতে রয়েছে চৌকস গোয়েন্দা টিম।
খোদ সরকার প্রধান সব বাহিনীকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
দেশের দীর্ঘতম এ সেতুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতে পদ্মার এপার-ওপার দুই পাশে দুটি নতুন থানা নির্মাণ করা হয়েছে যা ২১ জুন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনের দিন মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হবে বাড়তি পুলিশ। এরইমধ্যে বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি, সেতু এলাকায় টহল দিচ্ছে নৌ পুলিশ।
পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্সের সহকারী মহাপরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, জলে-স্থলে এবং আকাশে এ তিন স্তরের ব্যবস্থার মাধ্যমে কিন্তু আমরা আমাদের নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং বলয় ঠিক রেখে আমরা ২৫ তারিখের আনন্দঘন মুহূর্তে যে অনুষ্ঠানটি হবে সেটি সম্পন্ন করতে পারব।
পুলিশ বলছে, যেকোনো ধরনের নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত তারা।
মো. কামরুজ্জামান আরও বলেন, কেউ যদি এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কোনো রকম নাশকতা, কোনো রকম দুষ্টুচক্র লিপ্ত হতে চায় সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো অবশ্যই হয়েছে। আর ২৫ জুনকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে যে আনন্দ উল্লাস, যে বাঁধ ভাঙা আবেগ নিয়ে মানুষ পদ্মা সেতুর কাছে যাবে সেটিকে কন্ট্রোল করার জন্য আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি অবশ্যই নিয়েছি।
শুধু মুন্সীগঞ্জ কিংবা শরীয়তপুর নয়, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে জোরদার করা হবে সারা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর একদিন পর ২৬ জুন থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। এটি দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির উপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় এ সেতু।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। খরস্রোতা পদ্মা নদীর উপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: