ঢাকার কলাবাগানে অবস্থিত তেঁতুলতলা খেলার মাঠে পুলিশের থানা-ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে এলাকাভিত্তিক আন্দোলনের একজন সংগঠক সৈয়দা রত্না এবং তার ছেলেকে পুলিশ আটকের পর মধ্যরাতে মুচলেকা নিয়ে ছেরে দিয়েছে। এর আগে আইন বহির্ভূত এই আটকের ঘটনা বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং থানার সামনে কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ প্রদর্শনও করে। সকাল এগারোটার সময় মা এবং ছেলেকে থানায় তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই কোন প্রকার জিজ্ঞাসাবাদ, আইনী ব্যবস্থা ছাড়াই বসিয়ে রাখা হয়। পুলিশ সদস্যরা ওসির সাথে যোগাযোগ করতে বললেও রাত ৮ টা অবধি ওসিকে কোন মাধ্যমেই পাননি সৈয়দা রত্নার পরিবার।
কি ঘটেছিল সকালে?
রবিবার সকালে পুলিশের একটি দল তেঁতুলতলা মাঠে নির্মাণ কাজ শুরু করে। বছর-খানেক যাবত এই মাঠটিতে থানা-ভবন না তোলার জন্য এলাকাভিত্তিক একটি আন্দোলন চলছিল। এই আন্দোলনের অন্যতম একজন সংগঠন সৈয়দা রত্না। পুলিশ নির্মাণ কাজ শুরু করলে সৈয়দা রত্না সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি লাইভ করছিলেন। তারপর বেশ কয়েকজন লোক ও পুলিশ সদস্য সৈয়দা রত্নাকে ধমকাতে থাকেন এবং হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেন। তারপর সকাল পৌনে ১১টায় তাকে আটক করে কলাবাগান থানায় নিয়ে যাওয়ার পর থেকে থানার পুলিশ সদস্যরা সৈয়দা রত্নার পরিবারকে পরামর্শ দিয়েছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসির সাথে যোগাযোগ করার জন্য। তারপর রত্নার ১৭ বছর বয়সী কলেজ পড়ুয়া ছেলে মাকে খুঁজতে গেলে তাকেও আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কে এই সৈয়দা রত্না?
সৈয়দা রত্না একজন সংস্কৃতি-কর্মী। তিনি কয়েকটি পরিবেশবাদী, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত। সোমবার তার মুক্তি চেয়ে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে উদীচী, বেলা, বাপা, নিজেরা করি এবং গ্রিন ভয়েজসহ কয়েকটি সংগঠন। যদিও আগেই তাকে মুক্তি দেওয়া হল। তার আটকের খবরে অনেক সংস্কৃতি-কর্মী প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে তার মুক্তি চেয়ে পোষ্ট দিচ্ছেন।
পুলিশ কি বলছে?
পুলিশ বলছে, কলাবাগানের ওই জমিটিতে সরকারি ভবন তোলার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নেওয়া হয়েছে। সেই নির্মাণকাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সৈয়দা রত্না এবং তার ছেলেকে আটক করা হয়েছে বলে বলছে পুলিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: