সংবাদে আনভীরের নাম ও ছবি প্রকাশ: সময় টিভিতে বিজ্ঞাপন বন্ধ বসুন্ধারার

সময় ট্রিবিউন | ১ মে ২০২১, ০৪:৫৫

সায়েম সোবহান আনভীর: ফাইল ছবি

মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামী সায়েম সোবহান আনভীরের নাম ও ছবি সংবাদে প্রকাশ করায় সময় টিভিতে দেয়া বিজ্ঞাপনের চুক্তি বাতিল করেছে বসুন্ধারা গ্রুপ। আসামী সায়েম সোবহান আনভীর বসুন্ধারা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

শুক্রবার সময় সংবাদের আদালত বিটের রিপোর্টার আফজাল হোসেন তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেই স্ট্যাটাসের সঙ্গে সময় সংবাদে প্রচার হওয়া সংবাদের দুটো স্ক্রিনশটও আফজাল সংযুক্ত করেন।  

আফজাল হোসেন তার ফেসবুকের স্ট্যাটাসে লিখেন, “সোমবার (২৬ এপ্রিল) রাতে গুলশানের ফ্ল্যাট থেকে কলেজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার হয়। এরপর আত্নহত্যার প্ররোচনার দায়ে মামলা হয়।  আসামি করা হয় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে। এটা স্বিকার করতে সমস্যা নেই যে ঐদিন আসামির নাম- পরিচয় সেভাবে দেয়া হয়নি। তবে পুলিশের বক্তব্যের মাধ্যমে কৌশলে খবরটি তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে এমডির পরিচয়,ঘটনা সব আসে রিপোর্টে। এতে অনেকে ক্ষুব্ধ হন, হওয়াটা স্বাভাবিক।”

তিনি লিখেন, “মঙ্গলবার সকাল থেকে আসামির নাম পরিচয়, ছবিসহ দেয়া হয় নিউজে এবং নিউজের গুরুত্ব ও দর্শকদের আগ্রহ অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট পায়। তখনো বসুন্ধরার বিজ্ঞাপন ছিলো সময় টিভিতে। এমনকি বুধবার এমডির জামিন শুনানি না হওয়ার খবরটি বুলেটিনে শীর্ষ নিউজ হিসেবে গুরুত্ব পায়। এতেই ক্ষিপ্ত হন বসুন্ধরা। বাতিল করে বিজ্ঞাপনের চুক্তি। নিচের দুটি ছবি দেখলেই বুঝবেন।

উল্লেখ্য তিনি স্ট্যাটাসের সঙ্গে সময় সংবাদে প্রচার হওয়া সংবাদের দুটো স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করেন।  

তিনি আরও লিখেছেন, “এটা অস্বীকার কেউ করবেনা, বিজ্ঞাপন দাতার চাপ থাকে। কারণ গণমাধ্যম কর্মীদের বেতন-বোনাস এই উৎস থেকেই আসে। তবে নিউজ চলবে তার নিজস্ব গতিতে। এটাই গণমাধ্যমের চরিত্র হওয়া উচিৎ।”

আফজালের দেয়া সেই স্ট্যাটাসের পর অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন। এতে  কাজী শামীম হাসান নামের একজন মন্তব্য করে লিখেন, “বসুন্ধরাকে বিজ্ঞাপন দিতেই হবে। একমাত্র দেশ রূপান্তর বাদে সব পত্রিকা টিভি নিউজ করেছে। বসুন্ধরা কয়টাকে বিজ্ঞাপন না দিয়ে থাকবে? তাহলে তাদের ব্যবসা চলবে? সব পত্রিকা-টিভি নিউজ করলে তখন কিছু করতে পারে না। বিজ্ঞাপন দিতেই হবে।”

এহসান জুয়েল নামের একজন লিখেছেন, “কোন চ্যানেলই সামগ্রিকভাবে বস্তুনিষ্ঠ নয়, তবে সাংবাদিকরা অনেকেই ন্যায়পরায়ণতার পরাকাষ্ঠা।”

জিয়াউর বকুল নামের এক সংবাদকর্মী লিখেছেন, “শুধু আমরা নই অধিকাংশরাই তাদের (বসুন্ধারা) কাছে জিম্মি। তবে কিছু মানুষ এ ধরনের মানুষকে সব সময় ঘৃনার চোখেই দেখে। আর সে কারনেই সত্য চেপে থাকে না।”

এর আগে গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন রাতেই বসুন্ধারা গ্রুপের এমডি আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা করেন মুনিয়ার বড় বোন তানিয়া মামলা করেন। গতকাল রাতে আসামি সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী-সন্তান ও পরিবারের কয়েক সদস্য দেশ ছেড়েছেন। আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার তিন দিনের মাথায় তাঁরা দেশ ছাড়লেন।

গত ২৬ এপ্রিল মামলা হওয়ার পর গত ২৭ এপ্রিল পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সায়েম সোবহান আনভীরের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন আদালত। যদিও আনভীর দেশ ছেড়েছেন এমন প্রচার আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের জানান, অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ডেটা বেজের তথ্য অনুযায়ী সায়েম সোবহান আনভীর দেশেই আছেন। তিনি দুটি পাসপোর্ট ব্যবহার করেন। কোনোটি ব্যবহার করেই দেশত্যাগের কোনো তথ্য নেই।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: