সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূলে আনসার বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

সময় ট্রিবিউন | ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২২, ০২:০৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ছবি

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূলে আনসার বাহিনী বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ শান্তির দেশ, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলেই দেশের উন্নয়ন হয়। আর দেশের উন্নয়ন মানেই প্রতিটি পরিবারেরই উন্নয়ন। প্রতিটি পরিবার স্বচ্ছলভাবে চলাচল করুক। সুন্দরভাবে বাঁচুক সেটাই আমরা চাই।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩২তম জাতীয় সমাবেশে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে এ বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অর্থনীতি যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, দায়িত্বও বেড়ে যাচ্ছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিভিন্ন অবকাঠোমেগত উন্নয়ন হচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে নিরাপত্তায় আমাদের আনসার ভিডিপি যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে। আমাদের বিমানবন্দর ও পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় এই বাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছে। তা ছাড়া, কূটনৈতিক এলাকা, বিভিন্ন কূটনীতিক, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ বা বিভিন্ন বেসরকারি শিল্প কারখানা—প্রতিটি জায়গায় আনসার বাহিনীর অবদান রয়ে গেছে। করোনা মোকাবিলায় তারা যথেষ্ট ভূমিকা রেখে গেছেন। বিশেষ করে বিএনপি জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস; যখন তারা বাস-গাড়ি-রিকশা-ভ্যান, এমনকি রেলগাড়ি এবং রেললাইনে যখন অগ্নি সন্ত্রাস চালাচ্ছিল, আগুন দিচ্ছিল, জীবন্ত মানুষদের পুড়িয়ে মারছিল, সেই রেল লাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসার ভিডিপিকে দেওয়ার হয়েছিল। তারা যথাযথভাবে পালন করে যান। এ ধরনের কার্যক্রম করতে গিয়ে অনেককে জীবনও দিতে হয়েছে। তাদেরও আমি আজ স্মরণ করি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নে আমাদের আনসার-ভিডিপির যে অবদান রয়েছে, সেটা সব সময় আমরা স্বীকার করি। ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকার গঠন করি, তখন এ বাহিনীর অনেক সমস্যা ছিল। একে একে সে সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যবস্থা আমরা নিই। আনসার বাহিনীকে ১৯৯৮ সালে প্রথম সর্বোচ্চ সম্মান জাতীয় পতাকা প্রদান করেছিলাম।

আওয়ামী লীগ সরকারে এসে আনসার সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যারা সরকারি কাজে দায়িত্ব প্রাপ্ত তাদের প্রমোশনের ব্যবস্থা আমরা করে দিই। আগে এই চাকরির কোনো স্থায়ীত্ব ছিল না, স্থায়ীত্বকালও ছিল না। আমরা ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের চাকরি স্থায়ী করার পদক্ষেপ নিই। পর্যায়ক্রমে এখন ৬ বছর চাকরি করার পরে এই ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্থায়ী চাকরির সুযোগ পাচ্ছেন। সেই ব্যবস্থাটাও আমরা পর্যায়ক্রমে করে দিয়েছি।

আমি মনে করি, বিভিন্ন দায়িত্ব পালন অত্যন্ত যোগ্যতার সঙ্গে আপনারা করে যাচ্ছেন। যার ফলে সদস্য সংখ্যাও যৌক্তিকভাবে আমরা বৃদ্ধি করে দিচ্ছি। আনসার গার্ড ব্যাটালিয়ন, হাউস গার্ড, মডেল ব্যাটালিয়ন, সদর দপ্তরে আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। উন্নত মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে মানসম্মতভাবে যেন দায়িত্ব পালন করেন তার জন্য যথাযথ যা উপকরণ প্রয়োজন তার ব্যবস্থাটাও আমরা করে দিচ্ছি। আমাদের নারী আনসাররাও যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়। যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আমি আনসার ভিডিপির জন্য একটা ব্যাংক তৈরি করে দিয়েছি। আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক। যদিও ব্যাংকের এখন নিজস্ব কোনো ভবন নেই। এই ভবন যাতে নির্মাণ হয় এবং আমাদের বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো একই জায়গায় যাতে তৈরি হতে পারে সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নিচ্ছি। আপনাদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সব সময় আমার বিশেষ দৃষ্টি আছে। যারা যে কাজে দায়িত্বে থাকবেন, সে কাজটা যেন যথাযথভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে করতে পারেন সেই সুযোগ সুবিধাটা সৃষ্টি করা, সেটাই আমাদের দায়িত্ব, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, এই বাহিনীর অবকাঠামোসহ সর্ব ক্ষেত্রে আধুনিকায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা উন্নত করার বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ আনসার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে, কাজ করতে পারে না। বৃদ্ধ হয়ে যান, তারা নানা ধরনের অসুবিধায় পড়েন। তখন এই ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ফান্ড থেকে যাতে সহযোগিতা করা যায়, তার জন্য ফান্ড গঠন এবং সিড মানির ব্যবস্থা করে দেবো।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: