জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে সমুদ্র উপকূলবর্তী শহর আতামিতে ভূমিধসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ৮০ তে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন শহরটির মেয়র সাকায়ে সাইতো।
আতামি নগর প্রশাসনের মুখপাত্র হিরোকি ওনুমা রয়টার্সকে বলেন, শনিবার ঘটনার পর নিখোঁজের সংখ্যা প্রথমে ২০ জন বলা হয়েছিল, কিন্তু রোববার কর্মকর্তারা পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের ফোন কলের সূত্র ধরে নিখোঁজদের সংখ্যা নির্ধারণ বাদ দিয়ে বাসিন্দাদের তালিকা ধরে অনুসন্ধান শুরু করার পর সংখ্যাটি অনেক বেড়ে যায়।
ওনুমা আরো বলেন, রোববার প্রথম দিকে ধারণা করা হয়েছিল ১১৩ জন নিখোঁজ হয়েছেন, কিন্তু পরে সোমবার নিশ্চিত হওয়া গেছে- এখন পর্যন্ত আতামিতে নিখোঁজ রয়েছেন ৮০ জন।
শনিবার (৩ জুলাই) প্রবল বৃষ্টিপাত ও ভূমিধসের ফলে আতামির কাছাকাছি পাহাড় থেকে সৃষ্ট কাদা মিশ্রিত প্রবল জলস্রোত আতামি শহরের ওপর দিয়ে ২ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে সাগরে গিয়ে মিশে। শহরের ওপর দিয়ে স্রোতটি প্রবাহিত হওয়ার সময়েই নিখোঁজ হয়েছেন এই ৮০ জন। এছাড়া. প্রায় ১৩০ টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে আতামির নগর প্রশাসন।
জাপানের সংবাদমাধ্যম এনএইচকে টেলিভিশনকে আতামির এক বাসিন্দা বলেন, আমার মাকে এখনো খুঁজে পাচ্ছি না। কখনো কল্পনাও করতে পারিনি যে এমন কোনো দুযোর্গ দেখা দিতে পারে।
৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি শনিবারের দুর্যোগকে নারকীয় উল্লেখ করে বলেন, তার পাশের বাড়িতে এক তরুণ দম্পতি থাকতেন। শনিবার ঢলের পর থেকে তাদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
আতামির মোট জনসংখ্যা ৩৬ হাজার। একটি খাড়া পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এ্ শহরটি জাপানবাসীর কাছে অন্যতম বসন্তকালীন অবকাশকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
তবে শনিবারের দুর্যোগের পর থেকে আতামিজুড়ে এখন কেবল নিখোঁজদের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের হাহাকারের আওয়াজ আসছে। ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০-এরও বেশি উদ্ধারকর্মী চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়া ঘর ও কাদার নিচে চাপা পড়া স্থানগুলোতে নিখোঁজদের সন্ধানে তল্লাশি চালাচ্ছেন।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদা সুগা জানিয়েছেন, আমাদের লক্ষ্য, যারা এই দুর্যোগের শিকার হয়ে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাদের উদ্ধার করা।
এদিকে, জাপানের মন্ত্রিপরিষদ সচিব কাতসুনোবু কাতো এক বার্তায় আতামির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, শনিবারের ভূমিধসের পর ওই এলাকার মাটি আলগা হয়ে আছে। ফলে, অল্প বৃষ্টিও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
তিনি আরো বলেছেন, আতামিতে এখন বৃষ্টি থেমেছে, কিন্তু আরো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় ফের ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: