ভারতে টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা

সময় ট্রিবিউন | ১৭ জুন ২০২১, ১৯:৫৭

-মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটার-ফাইল ছবি

সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য প্রকাশ করে সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগে মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্য সরকার।

জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে, এবার টুইটারের বিরুদ্ধে আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এতোদিন নিজেদের দায়মুক্ত রাখতে তারা যে 'রক্ষাকবচ' ব্যবহার করতো, তা বাতিল করা হয়েছে। এখন টুইটারে প্রকাশিত যে কোনো ব্যাপার নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়া যাবে।

এদিকে, উত্তর প্রদেশে এক ব্যক্তিকে মারধরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। দৃশ্যতঃ মুসলিম ওই ভদ্রলোককে প্রথমে কয়েকজন ঘিরে ধরে প্রবল মারধর করে। পরে তার দাড়ি কেটে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। টুইটারে সেই ভিডিও প্রকাশিত হয়। বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক মন্তব্য করেন বেশ কিছু ব্যক্তি।

উত্তর প্রদেশ সরকারের বক্তব্য, ওই ঘটনার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার সম্পর্ক নেই। ওই ব্যক্তি তাবিজ-কবচ বিক্রি করতেন। তা নিয়েই স্থানীয়দের সঙ্গে তার বচসা হয়। যারা মারধর করেছে তাদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম সকলেই আছে। তাই, টুইটারকে ওই মন্তব্যগুলো সরিয়ে নিতে বলা হয়। কিন্তু, টুইটার তা না করায় রাজ্য সরকার আইনের আশ্রয় নিয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

তবে বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং নেটিজেনদের একাংশ বলছে, যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, তাদের গায়ে হাত না দিয়ে টুইটারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এই কাজের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশ সরকার নিজেদের সাম্প্রদায়িক চরিত্র স্পষ্ট করছে।

প্রসঙ্গত, টুইটারসহ একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতের কেন্দ্র সরকারের বিতর্ক চলছে। দিল্লি পুলিশ কিছুদিন আগে গুরুগ্রামের টুইটার অফিসে অভিযানও চালায়।

কেন্দ্র সরকারের বক্তব্য, সোশ্যাল নেটওয়ার্কের ডেটা প্রয়োজনে সরকারকে দিতে হবে। কিন্তু টুইটার স্পষ্ট জানিয়েছিল, এ কাজ বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ তাই তারা তা করতে পারবে না।

আবার প্রতিটি প্ল্যাটফর্মকে বলা হয়েছিল, ভারতে তাদের একজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ করতে হবে। কেন্দ্র যার কাছে জবাবদিহি চাইতে পারবে। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের সঙ্গে টুইটারের সংঘাত চলছে। বিজেপি সরকারের বক্তব্য, অন্য প্ল্যাটফর্মগুলো সহযোগিতা করলেও টুইটার করছে না। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের এই ঘটনা সেই সংঘাতকে আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: