ছয় বছরে সড়কে ৪৩ হাজারের বেশি মৃত্যু

সময় ট্রিবিউন | ২২ অক্টোবর ২০২১, ০৪:৩৩

ছবি: সংগৃহীত

গত ছয় বছরে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৩ হাজার ৮৫৬ জন নিহতের তথ্য দিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যের বরাত দিয়ে সংগঠনটির জানায়, সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৬৪ জন মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন, আর আহত হচ্ছেন ১৫০ জনের বেশি।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে দেশে দুর্ঘটনার তথ্য নিয়মিতভাবে সংরক্ষণ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল।

তাদের হিসাবে গত ছয় বছরে ৩১ হাজার ৭৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৪৩ হাজার ৮৫৬ জনের প্রাণ গেছে, আহত হয়েছেন ৯১ হাজার ৩৫৮ জন।

নিরাপদ সড়কের জন্য সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ধারাবাহিকভাবে তিনবারের ক্ষমতাসীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী নানা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হলেও তৃতীয় মেয়াদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে নিরাপদ সড়কের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।

২০১৮ সালে রাজধানীর শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে সারাদেশে নজিরবিহীন আন্দোলনের সূচনা করে শিক্ষার্থীরা। তাতে সরকার নতুন করে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু তারপরও পরের বছর দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭২২১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, পরের বছর মারা গেছেন ৭৮৫৫ জন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কের এমইএস এলাকায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় নিহত হন রমিজ উদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে সারাদেশে আন্দোলনে নেমে ‘বেপোরোয়া চালকের’ মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংযোজন করাসহ নিরাপদ সড়কের দাবিতে নয় দফা দাবি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা।

ওই বছরের শেষে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকারের মধ্যে নিরাপদ সড়কের প্রতিশ্রুতিও রাখা হয়।

মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নিরপত্তার জন্য আন্ডারপাস/ওভারপাস র্নিমাণ করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সেখানে।

মোজাম্মেল হক বলেন, ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে দেশব্যাপী লকডাউনে পরিবহন বন্ধ থাকার পরও ৪ হাজার ৮৯১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৬৮৬ জনের প্রাণ গেছে।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সালকে সড়ক নিরাপত্তা দশক ঘোষণা করে সদস্য দেশগুলোর সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছিল। অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদশ সে অঙ্গীকার রক্ষা করতে পারেনি।

সড়কে নিরাপত্তামূলক র্কমসূচির বাজেট বাড়ানো, গবেষণা, সভা-সেমিনার, প্রচারের মাধ্যমে গণসচতেনতা তৈরির পাশাপাশি সড়কে ‘চাঁদাবাজি বন্ধ করারও দাবি জানান তিনি।

এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং  ট্রাফিক বিভাগের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ বন্ধ করাসহ র্দীঘদিন ধরে আটকে থাকা ১২ লাখ ড্রাইভিং লাইসেন্স দ্রুত চালকদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: