সাম্প্রদায়িক হামলা: ৭১ মামলায় আটক ৪৫০

সময় ট্রিবিউন | ১৯ অক্টোবর ২০২১, ০৭:৩৯

রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয় ফেইসবুকে এক তরুণের ধর্ম অবমাননার পোস্টকে কেন্দ্র করে- ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা থেকে শুরুর পর গত পাঁচ দিনে সারাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় হওয়া ৭১টি মামলায় ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

সোমবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপকেন্দ্রিক ‘অপ্রীতিকর ঘটনায়’ এ পর্যন্ত ৭১টি মামলা রুজু হয়েছে। আরও কিছু মামলা রুজু প্রক্রিয়াধীন। এসব হামলা-ভাংচুরে জড়িত সন্দেহে ৪৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। আটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে পুলিশ। সব অপরাধীদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়।

দেশজুড়ে দুর্গাপূজা চলাকালে গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার কথিত অভিযোগ তুলে মন্দিরে হামলা ভাংচুরের পর তা আরও কয়েকটি জেলায় ছড়ায়, যাতে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে।

কুমিল্লার পর চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নোয়াখালী, ফেনীতে হিন্দু সম্প্রদার আক্রান্ত হয়।

সবশেষ রোববার রাতে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়ায় হিন্দুদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয় ফেইসবুকে এক তরুণের ধর্ম অবমাননার পোস্টকে কেন্দ্র করে। মাঝিপাড়া জেলেপল্লীর ২৯টি বাড়ি ও গোয়াল ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়; ভাংচুর করা হয় মন্দির।

এসব হামলা ও সহিংসতার মধ্যে সোমবার ফেনী ও রংপুরের পুলিশ সুপার এবং চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনারসহ এসপি মর্যাদার সাত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়।

এরপর সোমবার রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে মামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য দেওয়া হয়, আরেকটি বিবৃতিতে গুজব নিয়ে সতর্ক করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে কতিপয় ব্যক্তি-গোষ্ঠী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-বিভ্রান্তি ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে চক্রান্তকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট কিংবা বিভিন্ন তথ্য বিকৃত বা অপব্যাখ্যা করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে সংঘাতমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

সোশাল মিডিয়ায় গুজব-বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিট ‘মনিটর’ করছে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে।

এতে বলা হয়, গুজব-বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে এবং অযাচাইকৃত সংবাদ বিশ্বাস না করতে অনুরোধ জানিয়ে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণের সার্বিক সহযোগিতাও প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ পুলিশ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: