তালেবান ক্ষমতায় আসায় সন্তুষ্ট ৫০ শতাংশ: জরিপ

সময় ট্রিবিউন | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:৫২

স্টাডি গ্রুপ অন রিজিওনাল অ্যাফেয়ার্স-ফাইল ছবি

গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টাডি গ্রুপ অন রিজিওনাল অ্যাফেয়ার্স (এসজিআরএ) ২৩২ জন শিক্ষার্থীর মতামতে করা এক জরিপে বলছে, ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থীই আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসায় সন্তুষ্ট।

এর পেছনে কারণ হিসেবে তাদের ২২ শতাংশ  বলেছেন, এর মাধ্যমে ইসলামের বিজয় হয়েছে। এর ফলে ভারত চাপে থাকবে এমন কারণে সন্তুষ্টির কথা বলেছেন ৩.৭ শতাংশ। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পরাজয় হয়েছে বলছে ৯.১ শতাংশ, কাশ্মীরের মুসলমানদের মুক্তির সম্ভাবনা বেড়েছে ৬.৩ শতাংশ, তালেবান জঙ্গি সংগঠন নয় এটি প্রমাণিত হয়েছে ১৩.১ শতাংশ, বিশ্বব্যাপী ইসলাম রক্ষার সংগঠন তালেবান ১২ শতাংশ, এ অঞ্চলের ইসলামি দলগুলোর সাহস ও শক্তি বৃদ্ধি পাবে ১৭.৭ শতাংশ, মুসলিম দেশগুলোর শক্তি বাড়বে১২.৬ শতাংশ, পশ্চিমা শক্তিগুলোর আফগান থেকে প্রাকৃতিক সম্পদ পাচার বন্ধ হবে বলেছে ৪.৮ শতাংশ।

এসজিআরএ চলতি মাসের ১০ থেকে ২৪ তারিখ ঢাকার ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীর ওপর এ জরিপ করে। এতে অংশ নেন ২৩২ জন তরুণ।

বুধবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ‌‌আফগান তালেবানদের সম্পর্কে বাংলাদেশের তরুণদের প্রতিক্রিয়া ও মতামত' শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন স্টাডি গ্রুপ অন রিজিওনাল অ্যাফেয়ার্সের প্রধান নির্বাহী আমির খসরু।

জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেকই চান না, বাংলাদেশ সরকার তালেবানকে সমর্থন করুক। অসন্তুষ্ট ও খুব অসন্তুষ্ট ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ। বাকিদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

যারা সন্তুষ্ট তাদের মধ্যে ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ শর্তসাপেক্ষে সন্তোষের কথা বলেছেন। তারা বলেছেন তালেবানদের তারা সমর্থন করেন, যদি আফগান তালেবানরা নারী অধিকার রক্ষা, অঙ্গীকার পূরণ এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড না করে।

আমির খসরু জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরে বলেন, ‌জরিপের ফলাফলে এমনটি উঠে আসে যে, তালেবানের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থকে সমার্থক ও এক করে দেখার প্রবল প্রবণতা রয়েছে। এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও বিপজ্জনক প্রবণতা বলে মনে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সরাসরি লিখিত প্রশ্নপত্রে এই জরিপ করা হয়। জরিপে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশ ছেলে এবং ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মেয়ে। গবেষণায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ, আলিয়া মাদ্রাসার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, কওমী মাদ্রাসা ১১ দশমিক ২ শতাংশ , সরকারি কলেজ ৬ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বেসরকারি কলেজের ৬ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নেন। গবেষণায় স্নাতক, অনার্স ও সমমানের ৫৬ দশমিক ৯ শতাংশ; মাস্টার্স ও সমমানের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ; এইচএসসি ও সমমানের ২৪ দশমিক ১ শতাংশ; ৬ শতাংশ অষ্টম থেকে এসএসসি ও সমমানের এবং স্কুলের এক শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

জরিপে যারা তালেবানদের বিষয়ে নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা বলেছেন তারা কারণ হিসেবে বলেছেন, তাদের মধ্যে আফগানিস্তানে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে মনে করেন ১৯ দশমিক ১ শতাংশ, বাংলাদেশসহ অন্যান্য অঞ্চলে জঙ্গিবাদ বিস্তৃত হবে ১৮ দশমিক ১ শতাংশ, আফগান নারীরা শোষিত ও নির্যাতিত হবে ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ, পাকিস্তানের শক্তি বাড়বে ৬.৪ শতাংশ, এ অঞ্চলে চীন ও রাশিয়ার কর্তৃত্ব বাড়বে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, ভারত চাপে থাকবে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ, মাদক ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটবে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামি মৌলবাদের বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে উত্তর দিয়েছেন ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।

তালেবান-সম্পর্কিত খবরাখবর জানার উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়ার কথা জানিয়েছেন ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ উত্তরদাতা। অনলাইন নিউজ সাইট ২৪ দশমিক ১ শতাংশ, সংবাদপত্র ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ, টেলিভিশন ১২ দশমিক ৯ শতাংশ। এ ছাড়া ৪ দশমিক ৪ শতাংশ কোনোটিই দেখেন না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: