রাজধানীর সায়েন্সল্যাবে ভবন বিস্ফোরণের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নুরনবী নামের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তিনি ২০১৮-১৯ সেশনের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে সায়েন্সল্যাব এলাকায় প্রিয়াঙ্গন শপিং মলের পাশের ভবনে এ ঘটনা ঘটে। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিস্ফোরনের ঘটনায় তিনজন নিহত ও অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) বিস্ফোরণ থেকে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আহত ঢাবি শিক্ষার্থীর বিষয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহবুব আলম বলেন, সাইন্সল্যাবের একটা বিল্ডিংয়ের তিন তলায় একটা কিছু ব্লাস্ট হয়। বিস্ফোরণের সময় নুরনবী বিল্ডিংয়ের নিচে ছিল। এসময় তার ওপর তিন তলা থেকে ভারি জিনিস পড়ে। এতে এতার মাথায় আঘাত লাগে এবং ডান পা ভেঙে যায়। এখন ঢামেকে তার চিকিৎসা চলছে। আমরা কয়েকজন বন্ধু তার সঙ্গে আছি।
হাসপাতালে অবস্থানরত তার সহপাঠী ইমরান বলেন, আমরা ঢাকা মেডিকেলে দায়িত্বরত সাইফুল সাইফ ভাইয়ের পোস্ট দেখে নুরুন্নবীকে শনাক্ত করি। হাসপাতালে ডাক্তারদের মতামত সম্পর্কে তিনি বলেন, তার জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত ডাক্তাররা কোন কিছুর নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। পায়ে ও মাথায় ভারী কিছু ভেঙে পড়ায় পা ভেঙে গেছে ও মাথা ফেটে গেছে। মাথার ও পায়ের প্রাথমিক চিকিৎসা চলছে। জ্ঞান ফিরলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ডাক্তার জানিয়েছে।
জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আব্দুর রহিম বলেন, ঘটনা শোনার সাথে সাথেই আমি ঢাকা মেডিকেলের ইমার্জেন্সিতে চলে এসেছি। এখনো তার জ্ঞান ফেরেনি তবে ডাক্তার তার চিকিৎসা করছে। তার চিকিৎসার ব্যাপারে জহুরুল হক হল পরিবার সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে পাশে থাকবে। সবার একান্ত দোয়া কামনা করছি।
এদিকে, বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। নিহতরা হলেন- শফিকুজ্জামান, আব্দুল মান্নান, তুষার। আহত অন্তত হয়েছেন ১৪ জন। তাদের মধ্যে আটজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়; দগ্ধ হওয়া ছয়জনকে শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডাক্তার এস এম আইউব হোসেন ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মুহিতউদ্দিন খন্দকার।
ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, ভবনটির তিনতলা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভবন থেকে ইট ও জানালার কাচ উড়ে গিয়ে রাস্তা ও আশপাশের এলাকায় পড়েছে।
ঘটনাস্থলে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল কাজ করছে। তিনতলা ওই ভবনে বেশির ভাগই কাপড়ের দোকান ছিল। আশপাশে বেশ কয়েকটি আবাসিক ভবন রয়েছে। সেখান থেকে মানুষ আতঙ্কে নিচে নেমে এসেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিরিন ম্যানশন নামের ভবনটিতে দুর্ঘটনার সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকায় গ্যাসের তীব্র গন্ধ ভেসে আসে। বিস্ফোরণে দেয়ালের ইট ও কাঁচ ছিটকে সড়কে পড়ে। এতে করে ফুটপাতে থাকা পথচারী ও সিএনজিচালকসহ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: